Advertisment

নজরে ভিন রাজ্য জয়, দুই ফর্মুলায় বাজিমাতের চেষ্টা তৃণমূলের

বাংলায় হ্যাটট্রিক সম্পন্ন। এবার জোড়্-ফুলের পাখির চোখ ভিন রাজ্য। ময়দানে অভিষেক।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
abhishek banerjee wishes happy diwali to bjp after west bengal bypoll 2021 win

বাংলায় অপ্রতিরোধ্য তৃণমূল। বাড়ল আসন সংখ্যা।

শুধু লড়াই করার জন্য নয়, ক্ষমতা দখলের জন্যই অন্য রাজ্যে পা বাড়াবে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সর্বভারতীয় সাধারাণ সম্পাদক হওয়ার পরই এই বার্তা দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকেই ভিন রাজ্যে কংগ্রেসের ঘর ভেঙে শক্তিশালী হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিশেষত ছোট রাজ্যগুলিকে টার্গেট করে এগোতে চাইছে ঘাসফুল শিবির। একদিকে কংগ্রেস ও অন্যদিকে ছোট রাজ্য, এই দুই ফর্মুলায় এগোনোর পিছনে বিশেষ রণকৌশল লক্ষ্য করছে রাজনৈতিক মহল।

Advertisment

বিগত কয়েক মাসের রাজনৈতিক কার্যকলাপ লক্ষ্য করলে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। প্রথমেই তৃণমূল কংগ্রেস বাঙালি অধ্যুষিত পরশি রাজ্য ত্রিপুরায় অভিযান শুরু করে। সেখানে কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম থেকে তৃণমূলে অনেকেই যোগদান করে। শেষমেশ সন্তোষমোহন দেবের কন্যা কংগ্রেসনেত্রী সুস্মিতা দেবকে দলে নিয়ে রাজ্যসভার সদস্য করে দল। সন্তোষমোহন দেব ত্রিপুরায় সিপিএমকে গদিচ্যুত করেছিলেন। সুস্মিতা দেবকে উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির সংগঠনের কাজে নিয়োগ করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, কংগ্রেসের একাধিক শীর্ষ নেতৃত্বর সঙ্গে গোপন বৈঠক করছে ঘাসফুল শিবির। ইতিমধ্যে গোয়ায় কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরো সদলবলে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এবার মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা মুকুল সাংমার সঙ্গেও তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের যোগাযোগ চলছে বলে সূত্রের খবর।  

রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপির ঘোষণা ছিল কংগ্রেসমুক্ত ভারতবর্ষ। সর্বভারতীয় স্তরে একযোগে বিজেপি বিরোধী আন্দোলনের কথা বললেও ভিন রাজ্যে কংগ্রেস নেতৃত্ব থেকেই তৃণমূলে যোগের পালা চলছে। কংগ্রেস ভেঙেই সেই সব রাজ্যে শক্তিশালী হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখনও পর্যন্ত সেই দৃশ্যই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কংগ্রেসের ঘর ভাঙায় গেরুয়া শিবিরও বেজায় খুশি। কারণ, এটা বিজেপির অন্যতম এজেন্ডা। যে সব রাজ্যে কংগ্রেসের ঘর ভাঙার প্রক্রিয়া চলছে সেই সব রাজ্যে ক্ষমতায় আছে বিজেপি। অর্থাৎ পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে ওই রাজ্যগুলিতে ক্ষয়িষ্ণু কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের লড়াই হবে। সেক্ষেত্রে লোকসভা নির্বাচনের সময় কার্যত বিজেপির ফায়দার সম্ভাবনা তৈরি হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ভবানীপুরের উপনির্বাচন ঘোষণার আগে প্রায় দুবছর পর দিল্লি গিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসনেত্রী সনিয়া গান্ধি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ অনেকের সঙ্গেই পৃথক বৈঠক করেছেন। যদিও মোদী-মমতা বোঝাপড়া নিয়ে বামেরা নানা সময়ে প্রশ্ন তুলেছে।

এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস সংগঠন বৃদ্ধিতে ভিন রাজ্যে কংগ্রেস নেতৃত্বকেই নিশানা করেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, গান্ধী পরিবারের হাতে দলের কতৃত্ব থাকলেও অন্তর্দ্বন্দ্বে সংগঠনের জীর্ণ দশা সংগঠনের। সে পঞ্জাব হোক বা গোয়া, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, মেঘালয় সর্বত্র। এই অন্তর্কলহই এখন হাতিয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের। এরাজ্যে কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করা হয়েছিল, অন্য রাজ্যগুলিও এবার একই পথে এগোচ্ছে। তিনরঙা পতাকায় হাতের বদলে ঘাসফুল জুড়ে যাবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবার নির্বাচনী জনসভায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন, 'কংগ্রেস বিজেপির কাছে হারছে, তৃণমূল জিতছে।' ভবানীপুরের উপনির্বাচনে প্রার্থী না দিয়ে কংগ্রেস যা-ই বোঝাক, তাতে যে তৃণমূলের কিছু যায় আসে না তা ঘাসফুল শিবিরের কার্যকলাপে পরিস্কার।

তৃণমূলের টার্গেট যে ছোট রাজ্য তা নিয়ে কোনও সংশয় আপাতত নেই। ত্রিপুরা, আসাম, গোয়া, মেঘালয়। এভাবেই এগোতে চাইছে ঘাসফুল শিবির। ত্রিপুরা, গোয়া, মেঘালয়ে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে যুদ্ধজয়ের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। রাজনৈতিক মহলের মতে, কম আসনের বিধানসভা নির্বাচন হওয়ায় সংগঠনগত কাজ করা অনেকটা সহজ। তৃণমূলের প্রবীণ নেতৃত্ব যেহেতু একসময় কংগ্রেস রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সেক্ষেত্রে পুরনো যোগাযোগও এক্ষেত্রে অনকেটাই কাজে আসছে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে সামনেই বিধানসভা নির্বাচন, সেখানে এখনও কোনও বড় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তৃণমূলে যোগ দেননি। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশসহ বড় রাজ্যগুলিতে এই মুহূর্তে সংগঠন বিস্তারের কোনও পরিকল্পনা তৃণমূল ঘোষণা করেনি। দেশ ব্যাপী বিজেপির প্রধান বিরোধী হওয়ার মরিয়া প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

abhishek banerjee Mamata Banerjee tmc
Advertisment