Anubrata Mandal: দুদিন আগে দিনে-দুপুরে খুন হয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের আউসগ্রামের দেবশালার পঞ্চায়েত প্রধান শ্যামল বক্সীর পুত্র তথা তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেতা চঞ্চল বক্সী। খুনের ঘটনার তদন্তের দায়িত্বভার নিয়েছে সিআইডি। এখনও এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কেউ গ্রেফতার হয়নি। বৃহস্পতিবার মৃতের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে গিয়ে ভয়ঙ্কর হুঙ্কার ছাড়লেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি ও আউসগ্রামের পর্যবেক্ষক অনুব্রত মন্ডল। অনুব্রতর স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, 'খুনি দলের হলে গুলি করে মেরে দেওয়া উচিত।' একইসঙ্গে ভয়ঙ্কর খেলার কথাও ঘোষণা করেছেন কেষ্টবাবু।
দুদিন আগে দলীয় বৈঠক সেরে একই বাইকে চেপে গ্রামের বাড়ি দেবশালায় ফিরছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান শ্যামল বক্সী ও তাঁর ছেলে চঞ্চল বক্সী। পথে ভাতকুন্ডার একটু আগে জঙ্গলের মধ্যে দুটি বাইকে তাঁদের পিছন থেকে এসে দুষ্কৃতীরা সরাসরি গুলি চালায় তাঁদের লক্ষ্য করে। জানা গিয়েছে, একটি গুলি চঞ্চলের বুকে ও দুটি গুলি হাতে লাগে। ঘটনাস্থলে তাঁরা বাইক থেকে পড়ে যায়। ৫ রাউন্ড গুলি করে নিমিষে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চঞ্চলকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পর থেকে দেবশালায় উত্তেজনা বাড়তে থাকে।
তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ এই খুনের ঘটনায় অভিযোগের আঙুল তোলে বিজেপির দিকে। কিন্তু মৃত যুবনেতার বাবা শ্যামল বক্সী সেদিন থেকে একবারও বিজেপি বা সিপিএমকে ঘটনার জন্য দায়ি করেননি। এদিনও তিনি একই কথা বলেছেন। তাঁর বক্তব্য, তাঁর সঙ্গে সব দলেরই ভাল সম্পর্ক। বরং তাঁর এলাকায় বিরোধী নেই বলেই তিনি মন্তব্য করেছেন। এদিন অনুব্রত মন্ডল প্রথমে বিজেপির দিকে তির ছুড়লেও পরবর্তীতে হুঙ্কার ছাড়েন, 'দলের কেউ খুনি হলে গুলি করে মেরে ফেলা উচিত।' এই ঘোষণার পর অন্তর্দ্বন্দ্বের তত্ব আরও জোরালো হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বৃহস্পতিবার মৃত তৃণমূল নেতা চঞ্চল বক্সীর দেবশালার বাড়িতে আসেন বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। অনুব্রত মণ্ডল পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। দলীয় নেতা খুনের ঘটনায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন তিনি। অনুব্রত মন্ডল বলেন, 'এই খুন আমি মেনে নেব না। এই পরিবারটাকে ভালো করে চিনি। গ্রামে এঁদের কোনও শত্রু ছিল না। যেই খুন করুক, বিজেপি যদি ভাবে খুন করব তাহলে তৃণমূল চুপ থাকলেও কেষ্ট মন্ডল চুপ থাকবে না। ১৫ দিনের মধ্যে আসামী যদি ধরা না পড়ে তাহলে আমি ভয়ঙ্কর খেলা খেলে দিয়ে যাব। পুলিশ ও এসপিকে যা বলার বলেছি। ১৫ দিনের মধ্যে ন্যায্য আসামীকে গ্রেফতার করতে হবে। কোনও কাহিনী শুনব না।' খুনি যদি দলের কেউ হয়? এই প্রশ্নের জবাবে ক্ষুব্ধ অনুব্রতর নিদান, 'দলের কেউ হলে তাঁকে আগে গুলি করে মেরে দেওয়া উচিত।'
ঘটনার দিন থেকে মৃতের বাবা শ্যামল বক্সীর বয়ান ও এদিন অনুব্রতর নিদানের পর বিজেপির বক্তব্য, এই ঘটনায় বিজেপি কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। এপ্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রমন শর্মা বলেন, 'আগেই বলেছি যে এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। কারণ তাঁর বাবা ঘটনার সময় বাইকে চঞ্চলের পিছনে বসেছিল। তিনি সমস্ত বিষয়টি জানেন। তাই তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে বিজেপির এর মধ্যে কোন যোগ নেই। তিনি জানেন কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন