মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানে বিজেপি কর্মীদের তাণ্ডব দেখে গর্জে উঠলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। উত্তরপ্রদেশে সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হলে, হামলাকারীদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় পুলিশ। যাকে যোগী মডেল নাম দিয়ে প্রশংসার বন্যা বইয়ে দিয়েছেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা।
মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানের প্রেক্ষিতে বিজেপিকে নিশানা করার জন্য এবার সেই যোগী মডেলকেই হাতিয়ার করলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। তাঁর স্পষ্ট কথা, 'এবার যদি বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে বুলডোজার পাঠানো হয়, তো কেমন লাগবে?'
এনিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় টুইটও করেছেন তৃণমূলের এই প্রথমসারির নেত্রী। টুইটে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে 'ভোগী' বলেও তিনি কটাক্ষ করেছেন। সন্ন্যাস গ্রহণের আগে যোগী আদিত্যনাথের নাম ছিল অজয় সিং বিস্ত। সেই নাম টেনে এনে মহুয়ার টুইট, 'যদি ভোগীজি অজয় বিস্তের মডেল ব্যবহার করে গতকালের সরকারি সম্পত্তি নষ্টকারী বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে বুলডোজার পাঠানো হয়? বিজেপি কি তার নিজের নীতি সমর্থন করবে?'
মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেন বিজেপি কর্মীরা। কোথাও বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে পুলিশকে জলকামান ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে। কোথাও আবার পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। একা পেয়ে উর্দিধারী পুলিশকর্মীকে বেধড়ক মারধর করারও অভিযোগ উঠেছে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন- সাংলিতে ফিরল পালঘর, ছেলেধরা সন্দেহে গাড়ি থেকে নামিয়ে ৪ সাধুকে বেধড়ক মারধর
অভিযোগ এই মারধরের সময়, পুলিশ আধিকারিকদেরও রেয়াত করেননি হামলাকারী বিজেপির নেতা-কর্মীরা। এই গন্ডগোলের জেরে প্রায় অচল হয়ে গিয়েছিল কলকাতা ও হাওড়ার একাংশ। ক্ষতি হয়েছে বহু সম্পত্তির। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই প্রসঙ্গ তুলেই সরব হয়েছেন লোকসভার তৃণমূল সাংসদ। কলকাতা ও হাওড়ার হামলাকারী বিজেপি কর্মীদের তিনি একাসনে বসিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের হামলাকারীদের সঙ্গে।
সম্প্রতি, পয়গম্বর হজরত মহম্মদ সম্পর্কে বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার মন্তব্যের জেরে উত্তরপ্রদেশ জ্বলে উঠেছিল। বিভিন্ন শহরে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি। আক্রান্ত হন পুলিশকর্মীরাও। সেই ঘটনায় পুলিশকে বেছে বেছে হামলাকারীদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দিতে দেখা গিয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে। যা ঘিরে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
কিন্তু, উত্তরপ্রদেশে যেহুতু বিজেপির সরকার, তাই বিজেপি কর্মীরা যোগী সরকারের বুলডোজার ব্যবহারের নীতির প্রশংসা করেছিল। টুইটে বিজেপি কর্মীদের কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে সেই প্রসঙ্গই মনে করিয়ে দিয়েছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ।