/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2021/08/mamata-lakra.jpg)
রাজেশ লাকরা ও মমতা ব্যানার্জী। ছবি- সন্দীপ সরকার
বাংলা ভাগের দাবিকে এবার সমর্থন করলেন খোদ তৃণমূল নেতা। বাংলা ভেঙে গ্রেটার কোচবিহার রাজ্যের দাবি তুলেছেন বংশীবদন বর্মন। সেই দাবির সঙ্গে সহমত তৃণমূলের এসটি-এসসি সেলের সাধারন সম্পাদক রাজেশ লাকরা ওরফে টাইগার। শুধু তাই নয়। উত্তরবঙ্গের চারটি জেলার স্বায়ত্তশাসনের দাবিতেও সোচ্চার এই আদিবাসী সংগঠনের নেতা। তবে, দলীয় উপজাতি নেতার দাবিতে মান্যতা দেননি রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের স্বাধীন দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী বুলু চিক বড়াইক।
তৃণমূলের এসটি-এসসি সেলের সাধারণ সম্পাদক রাজেশ লকরা বলেছেন, "২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর যখন তৃণমূলে যোগদান করি তখনও আমার দাবি ছিলো উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলাকে পঞ্চম তপশীলের আওতায় এনে স্বায়ত্তশাসন ঘোষণার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাগজে ৯০ শতাংশ কাজ করেই দিয়েছেন, সেটার সাংবিধানিক রূপ পেতে প্রয়োজন জেলার একটা এরিয়া ডিমারকেশনের। সেই সাংবিধানিক স্বীকৃতি না মেলায় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন আদিবাসীরা।"
আরও পড়ুন-কেন মুকুল রায় পিএসি-র চেয়ারম্যান? স্পিকারের কাছে হলফনামা তলব হাইকোর্টের
দলীয় নীতির উল্টো পথে হেঁটে কেন স্বায়ত্তশাসনের দাবি করছেন রাজেশ ওরফে টাইগার? নিজের বক্তব্যের সপক্ষে বলতে গিয়ে তৃণমূলের আদিবাসী নেতা বলেছেন, "১৮৩৪ সালে আদিবাসীদের স্বায়ত্তশাসন দিতে ইংরেজদের সঙ্গে আদিবাসীদের একটা চুক্তি হয়েছিল। ইংরেজদের এমন বহু চুক্তি রয়েছে যা দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও কার্যকর রয়েছে। সেই চুক্তি অনুসারে ইংরেজরা আদিবাসীদের স্বায়ত্তশাসন দিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গের চারটি জেলা, সাওতাল পরগনা, ছোটনাগপুর অঞ্চলকে। উত্তরবঙ্গের চারটি জেলার ৪৪৬ টি মৌজাকে নিয়ে সেই চুক্তিরই সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছি।"
বিশ্ব আদিবাসী দিবস উপলক্ষে পৃথক গ্রেটার কোচবিহার রাজ্যের দাবিতে সরব হয়েছেন বংশীবদন বর্মন। এই দাবির পক্ষেও মত দিয়েছেন রাজেশ লকরা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, "বংশীবদন বাবুকে বলেছি আমরা দুজনেই ভূমিপূত্র। আমরা দুজনে একত্রিতভাবেই লড়াই করে নিজেদের দাবি আদায় করব। আমি পৃথক গ্রেটার কোচবিহার রাজ্যের দাবিকে সমর্থন করছি। সংবিধান গত ভাবে যেটুকু আমাদের প্রাপ্য সেটাই চাইছি। প্রাপ্য মিলছে না বলেই উত্তরবঙ্গে বঞ্চিত আদিবাসীরা"
তাহলে কী বিজেপি সাংসদ জন বার্লার পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবিকেও সমর্থন করেন তৃণমূল নেতা রাজেশ? তাঁর জবাব, "উত্তরবঙ্গ আলাদা রাজ্য। এটার কোনো অধিকার নেই। উনি রাজনীতি করার জন্য এবং ভোটের জন্য মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। উনি গ্রেটার কোচবিহার কেন বলছেন না? স্বায়ত্বশাসন কেন বলছেন না? আমরা কোনও রাজনীতি করতে নয়। সংবিধানগতভাবে যেটুকু আমাদের প্রাপ্য সেটাই চাইছি।"
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2021/08/rajesh-lakra.jpg)
আরও পড়ুন-ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের অনুমোদন দিচ্ছে না কেন্দ্র, পরিকল্পিত বন্যা: মমতা
বিজেপি সাংসদ জন বার্লা মাস খানেক আগেই পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি জানিয়েছিলেন। যার চরম প্রতিবাদ করেছে জোড়া-ফুল শিবির। গেরুয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে বঙ্গভঙ্গের অভিযোগ করেছে তৃণমূল। এবার দলের আদিবাসী সংগঠনের নেতার মুখে বাংলা ভাগের দাবিতে কার্যত বেকায়দায় রাজ্যের শাসক দল।
রাজেশ লাকরার দাবি বক্তব্য প্রসঙ্গে রাজ্যের অনগ্রসর দফতরের প্রতিমন্ত্রী তথা মালবাজারের বিধায়ক বুলু চিক বড়াইক বলেছেন, "সব দাবি মানা যাবে, কিন্তু বাংলা ভাগের দাবি কিছুতেই মানব না। ব্যক্তি রাজেশ কী বলেছেন জানি না।" এ বিষয়ে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল তৃণমূলকে বিঁধেছেন। তাঁর কথায়, "এ রাজ্যে যে আদিবাসীরা বঞ্চিত তা খোদ স্বীকার করে নিয়েছেন আদিবাসী তৃণমূল নেতা রাজেন লাকরা। রাজ্যের তৃণমূল সরকার বিরোধী জনপ্রতিনিধিদের যেমন গুরুত্ব দেয়না, তেমনি বিরোধী দলের সমর্থক আদিবাসীদেরও কোন সুযোগ সুবিধা দেয় না। যারাই বাংলাভাগের বিরোধিতা করে, তাদের দলের নেতাই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবিকে সমর্থন করেন। সেটা আরও একবার প্রমাণিত।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন