রাজ্যের সাত বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন ঘোষণা নিয়ে হেলদোল দেখাচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। এদিকে দ্রুত উপনির্বাচনের দাবিতে গত মাসেই দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দফতরে গিয়ে তদ্বির করেছিলেন তৃণমূল সাংসদরা। শুক্রবার ফের তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে এই নিয়ে দরবার করেন। উপনির্বাচন সংক্রান্ত অগ্রগতির খোঁজ খবর নেওয়া হয়।
সিইও-র সঙ্গে বৈঠকের পর এ দিন পার্থবাবু বলেন, "করোনার সময় আমরা বলেছিলাম ৮ দফায় নির্বাচন না করাতে। কিন্তু কমিশন শোনেনি। তারা নির্বাচন ৮ দফায় করেছিল। আজ করোনা অনেকটাই কমেছে, সব বিধিনিষেধ মেনেই নির্বাচন হোক। এখানে কথা বলে আমরা কিছুটা সন্তুষ্ট, কিছু কাজ এখানকার অধিকারিকরা করেছেন। তবে, জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখনও কোনও সদর্থক ভূমিকা দেখা যায়নি।"
উপনির্বাচন ঘোষণা সংক্রান্ত ঢিলেমির জন্য মুখে নাম না নিলেও বিজেপিকেই নিশানা করেন তৃণমূল মহাসচিব। বলেন, "আমরা কিছু চিঠি নির্বাচন কমিশনের থেকে পেয়েছি, তাতে বোঝা যাচ্ছে যে হয়তো বা একটা-দুটো ধাপ কাজ এগিয়েছে। কিন্তু নির্বাচন মণ্ডলী এ ব্যাপারে সজাগ হচ্ছেন না। রা গণতন্ত্র রক্ষা করার কথা বলছেন, তাঁরাই এই রাজ্যে গণতন্ত্রের অন্যতম প্রক্রিয়া নির্বাচনকে ঢিলেমি দেওয়ার ও দীর্ঘায়িত করার একটা চেষ্টা চালাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশন যেন এই ধরনের কোনও ঘটনায় প্রভাবিত না হন সেই কথাও আমরা জানিয়েছি। অবিলম্বে নির্বাচনের দিন ঘোষণারও আবেদন করেছি।"
আরও পড়ুন- অভিষেক-রাজীব সাক্ষাৎ, ঘরওয়াপসি নিয়ে তুঙ্গে চর্চা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রীর পদে আসন নেওয়ার পর ৩ মাস সময় কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও সেই পদের স্থায়িত্বের গ্যারেন্টি নেই। কারণ, ৬ মাসের মধ্যে উপনির্বাচনে জয়লাভ না করে এলে ইস্তফা দিতে হবে তাঁকে। কিন্তু উপনির্বাচন ঘোষণা নিয়ে এখনও কোনও হেলদোল দেখাচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। বিষয়টি নিয়ে গত মাসেই রাজধানীতে নির্বাচন কমিশের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন তৃণমূল সাংসদরা। শুক্রবার ফের তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে এই নিয়ে দরবার করেন।
বাংলায় দু’টি কেন্দ্রে পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন ছাড়াও রাজ্যের ৫ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে। করোনা আবহে এই নির্বাচন কবে হব, এখন তা নিয়েই প্রশ্ন। নিয়ম অনুযায়ী, বিধানসভা ভোট মেটার ৬ মাসের মধ্যেই উপনির্বাচন করতে হয়। কিন্তু উপনির্বাচনের এখনও কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।
আর এতেই রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছে রাজ্যের শাসক শিবির। নন্দীগ্রাম থেকে পরাজিত (যদিও এই কেন্দ্রে ভোট পুনর্গনণার মামলা বিচারাধীন) হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। যদিও মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন তিনি। ফলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে উপনির্বাচনে জিতে আসতে হবে তাঁকে। ভবানীপুর আসনেই উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা। নভেম্বরেই শেষ হচ্ছে ৬ মাসের মেয়াদ। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উপনির্বাচনের দাবিতে সরব তৃণমূল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন