বাজেট অধিবেশনের শুরুতেই সংসদের যুগ্ম অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। রাষ্ট্রপতির সেই ভাষণের ওপরেই ছটি সংশোধনী জমা দিয়েছে তৃণমূল। এছাড়াও, সিএএ বিরোধিতা, অর্থনৈতিক মন্দা এবং কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রপতির ভাষণে উল্লেখ না থাকায় প্রশ্ন তুলেছেন জোড়া-ফুল সাংসদরা। দলের তরফে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন এবং সুখেন্দুশেখর রায় সংশোধনী জমা দিয়েছেন। লোকসভায় এই সংশোধনী জমা দিয়েছেন সৌগত রায়। এর আগে কখনও রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর সংশোধনী জমা করেনি তৃণমূল। তাহলে কেন হঠাৎ এর প্রয়োজন পড়ল? দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তারই সোজাসাপটা জবাব দিয়েছেন নদিয়ার তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
প্রশ্ন: রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর এর আগে কখনও সংশোধনী জমা দেয়নি তৃণমূল। এবার কেন তার প্রয়োজন হল?
উত্তর: সাংবিধানিক পদের মর্যাদা রক্ষায় এর আগে কখনই রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের উপর আমরা সংশোধনী জমা করিনি। কিন্তু, এবারের বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। তাঁর বক্তব্যের বহু জায়গায় 'বিভেদ' তৈরি করছে। তাই আমাদের এবার সংশোধনী আনতেই হয়েছে। দলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় সংশোধনীর দাবি জানিয়েছেন।
প্রশ্ন: সংসদে আপনি আপনার বক্তব্যে 'বিরোধী স্বরকে দানবীয়ভাবে চিত্রিত করার দোষে' সরকারকে অভিযুক্ত করেছেন। কেন?
উত্তর: দেখুন মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর কি বলেছেন! সে যাদের গুলি মারতে উস্কানি দিচ্ছে তারা হয় আমাদের পিতা, না হলে সন্তান। তারা কী সবাই জঙ্গি? এছাড়াও ওদের (বিজেপি) রুচি কতটা নিম্ন ও নির্লজ্জ যে- অশ্লীল মন্তব্যের জন্য যার প্রচারের উপর কমিশন ৯৬ ঘন্টা নিষেধাজ্ঞা জারি করল তাকেই (বিজেপি সাংসদ পরভেশ ভর্মা) সংসদে বিতর্কের সূচনার জন্য বেছে নেওয়া হল। এমনকী সেই সময় তাঁর নিষেধাজ্ঞাও ওঠে নি। এটা প্রতিটি ভারতীয়কে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
প্রশ্ন: শাহিনবাগের প্রসঙ্গের অতি ব্যবহার কী দিল্লি ভোটে বিজেপিকে বেশি সুবিধা করে দেবে বলে আপনি মনে করেন না?
উত্তর: এটা শুধু দিল্লি নির্বাচনের বিষয় নয়। দেশে এত দিন ধরে যা গড়ে উঠেছে তা প্রত্যেকদিন এক একটা করে ধ্বংস করছে ওরা (বিজেপি)। অর্থনীতি, কর্মসংস্থানের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সামনে এলেই মিথ্যা বলা হচ্ছে, সত্যকে ঢেকে দেওয়ার নানা চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে ধর্মের নামে ভয় দেখান হচ্ছে। শাহিনবাগ কেবল অসন্তোষের এক বহিঃপ্রকাশ মাত্র। তারা যেন মনে রাখে ৩০৩ সংখ্যা মানুষের দ্বারাই শূন্যে পরিণত হবে।
প্রশ্ন: যে আইনের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলো প্রতিবাদ করছে তা সংসদে পাস হয়েছে, সরকার কিন্তু বারংবার একথা বলছে...
উত্তর: শাসকের কাছে যথেষ্ট সংখ্যা রয়েছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। যা মনে হবে ওরা তাই করতে পারে। আগমিকাল ওদের যদি মনে হয় ৩৫৬ ধারা জারি করবে বা দার্জিলিং-কে বিচ্ছিন্ন করবে তাহলে আমরা শুধু তা দেখতে পারি। কিন্তু, এটা নৈতিকতার বিষয়। আপনার কাছে দড়ি রয়েছে। এবার সেটা মানুষকে ঝোলানোর কাজে ব্যবহার করবেন, নাকি কুয়ো থেকে জল তোলার ক্ষেত্রে- সেটা আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
প্রশ্ন: সংশোধনী পাসের জন্য অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে কী আপনার দল যোগাযোগ করছে?
উত্তর: এটা আমি বলতে পারব না। এই বিষয়ে আমার দলের নেতারাই উত্তর দিতে পারবেন।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন