''ঘরে বসে দূরবীন দিয়ে উনি শুধু বাংলায় খুন আর হিংসাই দেখছেন। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশে কী হয়েছে দেখেছেন?'', নাম না করে এভাবেই রাজ্যপালকে নিশানা করলেন তৃণমূলনেত্রী। একইসঙ্গে প্রজাতন্ত্র দিবসে রেড রোডে রাজ্যপালের দিকে উল্টো মুখ করে দাঁড়ানো ঘোড়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরেও ঘুরিয়ে কটাক্ষ করলেন ধনকড়কে। তৃণমূল সুপ্রিমোর এই বক্তব্যেই দলের সাংগঠনিক নির্বাচনী সভা হয়ে উঠল জগদীপ ধনকড়কে আক্রমণের অন্যতম মঞ্চ।
রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। দিন কয়েক আগেই রাজ্যপালকে নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ব্লক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেকথা সাংবাদিক সম্মেলনে নিজেই ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপালকে সরাতে তাঁরই নির্দেশে প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রীকে আবেদন জানিয়েছেন দলের সাংসদরা। তিনি নিজেও প্রধানমন্ত্রীকে ধনকড়ের অপসারণ চেয়ে চারবার চিঠি লিখেছেন।
তবে এত কিছুতেও রাজ্যপাল আছেন নিজের ছন্দেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে টুইটে ব্লক করার দিনেও তিনি ফের টুইট করেছেন। নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীকে দায়িত্বশীল হওয়ার বার্তাও দিয়েছিলেন ধনকড়। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এখন একমাত্র দাবি, রাজ্যপালের অপসারণ। সেই দাবিতেই এবার অলআউট ঝাঁপাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এদিনের সাংগঠনিক সভাতেও নাম না করে তাই ধনকড়ের কড়া সমালোচনায় সরব তৃণমূলনেত্রী।
গত ২৬ জানুয়ারি রেড রোডে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের কাছে এসে পিছন ঘুরে দাঁড়িয়ে পড়েছিল একটি ঘোড়া। মাউন্টেড পুলিশ সেই ঘোড়াটিকে বাগে আনতে রীতিমতো হিমশিম খায়। এদিন সেই ঘটনাটির জিগির টেনে নাম না করে ধনকড়কে বিঁধেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এদিন বলেন, ''২৬ জানুয়ারি একটা ঘোড়াকে দেখছিলাম। একদল ঘোড়ার পাল রাজ্য শাসন করতে পাঠিয়েছেন। মাউন্টেড পুলিশও জানতে পেরে গেল, ঘোড়ার পাল। সকাল নেই, সন্ধে নেই সবসময় আমাকে গালগাল করছে। আবার আমাকেই টুইট করছে।''
আরও পড়ুন- ‘দলে কেউ কারও সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াবেন না’, নেতা-কর্মীদের পাঠ দিলেন মমতা
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ তুলে বারবার সোচ্চার থেকেছেন রাজ্যপাল। আইনশঋঙ্খলা ইস্যুতে রাজ্য সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন ধনকড়।
এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ''ঘরে বসে দূরবীন দিয়ে উনি শুধু বাংলায় খুন, হিংসা দেখছেন। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশে কী হয়েছে দেখেছেন? গুজরাতে কী হচ্ছে দেখছেন? কাউন্সিলর তো কখনও হতে পারেনি। শুধু বড় বড় কথা। মা ক্যান্টিনের টাকার কৈফিয়ত দিতে হবে বলছে। বলছে আমার নির্দেশ মানতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া কোনও কাজ করা যায় না। কিন্তু যখন তখন মুখ্যসচিবকে ডাকছেন।''