Kolkata Shaheed Diwas: বিকেল চারটে। দিনহাটার শামিম আখতার এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছেন ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে শহিদ মঞ্চের দিকে। জামার পকেট থেকে ঝুলছে ২১ জুলাই লেখা প্লাস্টিকের ব্যাজ। দিনহাটার শামিম বললেন, "আমি উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে শনিবারই কলকাতায় এসেছি। আছি সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে। দুপুরে ডিম-ভাত খেয়ে শহিদ মঞ্চ দেখতে এসেছি।" শামিমরা শহিদ মঞ্চ দেখতে এলেও এবার উৎসাহীদের সংখ্যা অন্যবারের তুলনায় একটু কম বলেই জানান দিচ্ছে শনিবারের ধর্মতলা। এদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ধর্মতলায় তদারকি করতে হাজির হন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভিড় নিয়ে যে সংশয় রয়েছে, তা এদিন বলে দিচ্ছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের চোখমুখ।
দুপুর সাড়ে ১২ টা নাগাদ খাঁ খাঁ করছে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে। সেখানে থাকার ব্যবস্থা হয়েছে হাজার দু'য়েক তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের। দেখা গেল, গুটি কয়েক তৃণমূলকর্মী ঘোরাফেরা করছেন ওই কেন্দ্রের ভিতরে। দক্ষিন দিনাজপুরের অজিত বিশ্বাস এদিন সকালেই এসেছেন শহরে। তিনি বলেন, "এখন একটু জিরিয়ে নেব। তারপর বিকেলে ঘুরতে বেরবো শহরে। একবার শহিদমঞ্চও দেখে আসব। এবার তো অনেকে আসেনি।" অজিতবাবু আরও জানান, "সভা তো কাল। হয়তো এরমধ্যে চলে আসবে"। তবে অন্যান্য বছর শহিদ দিবসের আগের দিনগুলিতেই এই সব শিবিরগুলো ভিড়ে ঠাসা হয়ে যেত।
আরও পড়ুন- এবারের ২১ জুলাই কেন মমতার কাছে সম্পূর্ণ আলাদা
এদিকে, শুক্রবারই সেন্ট্রাল পার্কে এসেছেন আলিপুরদুয়ার ফালাকাটার পার্বতী বিশ্বাস, পুষ্পা বিশ্বাসরা। একেবারে সপরিবারে। এবারও দুপুরের মেনুতে ছিল ডিম-ভাত। গতকাল তাঁরা সায়েন্স সিটি দেখতে গিয়েছিলেন। পার্বতী, পুষ্পারা জানান, "একদিন আগেই বাচ্চাদের নিয়ে চলে এসেছি"। শুক্রবার সায়েন্স সিটি, শনিবার ভিক্টোরিয়া, আর রবিবার মিটিংয়ের পর বাড়ি ফেরা। মোটের উপর এটাই তাঁদের সফরসূচি। গতবছরও ২১ জুলাই উপলক্ষ্যে কলকাতা ঘুরেছিলাম, জানান পার্বতী। এখানে কালিম্পং ও দার্জিলিং থেকেও অনেকেই এসেছেন। মুর্শিদাবাদ ও মালদার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা রয়েছেন গীতাঞ্জলী স্টেডিয়ামে।
আরও পড়ুন- একুশের মঞ্চ থেকে কাল কী বার্তা দেবেন মমতা, কান পেতে আছে রাজনৈতিক মহল
সামগ্রিকভাবে উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের লোকসভার ফলাফল তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এরপর বিগত কয়েকদিন ধরে সেখানে লাগাতার বৃষ্টিপাত চলছে। ফলে, উত্তরবঙ্গ থেকে যে বিশাল সংখ্য়ক দলীয় কর্মী-সমর্থক শহিদ দিবসের দিন কলকাতায় হাজির হতেন, সেই সংখ্যাটা এবার স্বাভাবিকভাবেই কমবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শুধু উত্তরবঙ্গই নয়, জঙ্গলমহল থেকেও কর্মী-সমর্থকদের সংখ্যায় ভাঁটা দেখা দিতে পারে। ওয়াকিবহালমহলের মতে, লোকসভা নির্বাচনের ফলের পর এই সভায় অন্যবারের মতো ভিড় জমানোটাই বড় চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের কাছে। তবে শনিবারের বারবেলা বা বিকেলের পরিবেশ বলছে, রবিবারের শহিদ দিবস ২০২১-এর বার্তা দেবে। তবে সেই বার্তা কতটা তৃণমূলের পক্ষে থাকবে সেটাই দেখার।