প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে প্রথমেই থতমত খেলেন তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি। উত্তর ২৪ পরগণার পর বীরভূমেও তৃণমূলে ধ্বস নামালো বিজেপি। লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক মণিরুল ইসলাম ও নানুরের প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরা বুধবার দিল্লিতে বিজেপিতে যোগ দিলেন। বীরভূম যুব তৃণমূলের সাধারন সম্পাদক মহম্মদ আসিফ ইকবালও যোগ দিয়েছেন পদ্ম শিবিরে। এরপর কাদের পালা?
তৃণমূল কংগ্রেসের দোর্দন্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মন্ডলের কাছে ঘর ভাঙার বিষয়ে যে কোনও খবর ছিল না, তাঁর কথাতেই স্পষ্ট। বুধবার যখন দিল্লিতে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বীরভূমের তৃণমূল নেতারা, তখন অনুব্রত মন্ডল নিজেই জানতে চাইলেন ওই জেলার কোন কোন তৃণমূল নেতা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর নিজের ঘর থেকেই তৃণমূলের বিদ্রোহ শুরু করিয়েছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। মঙ্গলবার তিন বিধায়ক, ৬৫ জন কাউন্সিলরকে দলে নিয়েছে বিজেপি, দখল করেছে চারটি পুরসভা। বুধবার বিজেপি হানা দিল অনুব্রত মন্ডলের গড় বীরভূমে। দলবদলের খেলা যে চলবে, তা মঙ্গলবারই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। মণিরুলের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দিতে থতমত খেলেন অনুব্রত। এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রয়া নেই বলে প্রথমে জানিয়েও দিলেন তিনি।
বিজেপি কি তৃণমূলের চর্চিত শক্ত ঘাঁটিতে হানা দিয়ে তৃণমূলকে কড়া বার্তা দিল? সূত্রের খবর, এরাজ্যে তৃণমূলের সংখ্যালঘু নেতৃত্বকে দলে টানার ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে গেরুয়া শিবির, সৌজন্যে মুকুল রায়। সংখ্যালঘুদের নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন, যে গরু দুধ দেয় তার লাথিও খাওয়া যায়। ইফতারে তিনি একশো বার যাবেন বলেও জানিয়ে দেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, সেই ঘোষণার পর রমজান মাসে সংখ্যালঘু বিধায়ককে দলে টেনে তৃণমূল নেতৃত্বকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ল বিজেপি। সংখ্যালঘুরাও যে বিজেপিতে যোগ দিতে কোনও দ্বিধা করছেন না, সেই বার্তাই দিতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
বিধায়ক মণিরুল ইসলাম বিজেপিতে গিয়েছেন, কী বলছেন অনুব্রত? বীরভূমের বেতাজ বাদশা বলেন, "উনি (মণিরুল) ভাল বুঝেছেন তাই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। এই নিয়ে পরে চিন্তা করব।" অনুব্রতর আরও বক্তব্য, "দুবছর ধরে মণিরুল ইসলাম এলাকায় যান না। ওঁর ক্যান্সার তো! ওঁকে আমি ভালবাসি।" নানুরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক গদাধর হাজরা সম্পর্কে অবশ্য তাঁর মন্তব্য, "ও আবার কীসের নেতা!"