সিঙ্গুরে জমি আন্দোলনই তৃণমূলের ক্ষমতায় অরোহনের সোপান। সেই সিঙ্গুরেই গোষ্ঠী কোন্দলে দীর্ণ জোড়া-ফুল শিবির।
মিটছে না সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্নার দ্বন্দ্ব। এ বার বেচারামের অনুগামী গোবিন্দ ধাড়াকে সিঙ্গুরের ব্লক সভাপতি হিসাবে দল নিয়োগপত্র দিতেই ফের গর্জে উঠেছেন ‘মাস্টারমশাই’। সিঙ্গুরে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে অভিযোগ তাঁর। দলীয় পদক্ষেপের প্রতিবাদে তাঁর প্রতিবাদ চলবে বলে সাফ জানিয়েছেন বর্ষীয়ার রবীন্দ্রনাথবাবু।
সিঙ্গুরের বিধায়কের কথায়, 'সবাই জানে গোবিন্দ ধারা দুর্নীতিগ্রস্ত। লাখ লাখ টাকা দিয়ে স্ত্রী, পুত্র ও পুত্রবধূর নামে জমি কিনে রেখেছে গোবিন্দ। আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে। আমরা ওকে ব্লক সভাপত হিসাবে মেনে নেব না।' নভেম্বরেও একই অভিযোগে সরব হয়েছিলেন সিঙ্গুরের বিধায়ক।
সেই প্রতিবাদের পর কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত গত বুধবার সিঙ্গুরের ব্লক সভাপতি হিসাবে মনোনয়ন পেয়েছেন গোবিন্দ ধারা। তাহলে আদৌ কী তাঁর প্রতিবাদে কর্ণপাত করবেন দলীয় নেতৃত্ব? জবাবে মাস্টারমশাই বলেন, 'আমি এখনও দল ছাড়িনি। দলে থেকেই প্রতিবাদ করছি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমার লড়াই। আশা করি নেত্রী এর সঠিক বিচার করবেন।' এই প্রতিবাদে সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির বেশ কয়েকজন দলীয় সদস্যকেও রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য।
তবে যাঁর বিরুদ্ধে 'দুর্নীতি'র অভিযোগ সেই গোবিন্দ ধারা বলেছেন, 'দল যা দায়িত্ব দেবে আমি তা পালন করব। বিধানসভায় দলীয় প্রার্থীকে জেতানোই এখন আমার কাজ। যদিও ফের রবীন্দ্রনাথবাবুকে প্রার্থী করা হলে মানুষ আর ভোট দেবে না।'
সম্প্রতি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলে দল বদল করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তার আগে দল বদলের তালিকায় রয়েছেন কোচবিহারের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। একই পথের পথিক তৃণমূলের আরও ৬ বিধায়ক। প্রকাশ্যেই ক্ষোভের কথা তুলে ধরেছেন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সরব রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য।
আপাতত অবশ্য ধীরে চলো নীতি নিয়ে দলের অবস্থান মাপতে চাইছেন 'মাস্টারমশাই'। তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা তিনি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন। বর্ষীয়ান বিধায়কের এই ভাবনাই আপাতত ভাবাচ্ছে জোড়া-ফুল শিবিরকে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন