হাঁসখালি ধর্ষণকাণ্ড প্রকাশ্যে আসতেই সরব হয়েছিল বিরোধী শিবির। যা নিয়ে পাল্টা তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রীও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি ছিল যে, রাজ্য সরকারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টায় রোজই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি ঘিরে তোলপাড় রাজ্য। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার হাঁসখালি নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। বললেন, 'যে রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী, সেখানে একটা অত্যাচারের ঘটনাও লজ্জার।'
দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগতবাবু এ দিন বলেছেন যে, 'মহিলাদের উপর অত্যাচার নিয়ে সকলেই চিন্তিত। এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স করতে হবে। কোনও ঘটনা ঘটলে ব্যবস্থা নিতে হবে। এসব বরদাস্ত করা যাবে না। যে রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী, সেখানে একটা অত্যাচারের ঘটনাও লজ্জার। আশা করব, পুলিশ প্রশাসন এই বিষয়ে নজর রাখবেন।'
দেগঙ্গা, মাটিয়া, ইংরেজবাজার, বাঁশদ্রোণী, হাঁসখালিতে সম্প্রতি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। সেই প্রেক্ষিতেই এ দিন সৌগত রায়ের মন্তব্য তাৎপর্যবাহী বলেই মনে করা হচ্ছে।
সৌগত রায়ের এই মন্তব্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিরোধীদের প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রী যেখানে বলছেন নারীদের উপর অত্যাচারের ঘটনা 'অপপ্রচার', সেখানে সৌগত রায় বলছেন যে রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী, সেখানে একটা অত্যাচারের ঘটনাও লজ্জার। তাহলে কী তিনি মেনে নিলেন যে, রাজ্যে নারীদের উপর অত্যাচার হচ্ছে? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, রাজ্যে নারীদের উপর অত্যাচার ও দলের অবস্থান নিয়েও শাসক দলের অন্দরে যে মত-পার্থক্য রয়েছে তা সৌগতবাবুর বক্তব্যে কার্যত পরিস্কার হয়ে গেল।
আরও পড়ুন- ‘পুলিশ মাটি মাফিয়াদের থেকে টাকা তোলে’, বিস্ফোরক তৃণমূল বিধায়ক
সৌগত রায়ের বক্তব্য নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, 'মুখ্য়মন্ত্রী মহিলা না পুরুষ, এ ক্ষেত্রে তা বিচার্য নয়। আসল কথা হল এসবের জন্য আমাদের রাজ্যের মাথা নত হচ্ছে। সৌগতবাবু সঠিক কথা বলেছেন। তবে যতটা দৃঢ়তার সঙ্গে বললে হত তা তিনি পারেননি।'
বিজেপির রাজ্য সভাপতি পরামর্শ যে, 'সৌগত রায় বিষয়টি উপলব্ধি করতে পাচ্ছেন। কিন্তু দক্ষিণেশ্বরেরর থানা উদ্বোধনের মঞ্চে না বলে ওনার উচিত সত্যি কথাগুলো কালীঘাটে গিয়ে বলা।'
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, 'সৌগতবাবু মেনে নিলেন রাজ্যে মহিলাদের উপর আক্রমণ চলছে এবং পুলিশ প্রশাসন ব্যর্থ। অধ্যাপক সৌগত রায় আসলে হাঁসখালি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রেগন্যান্ট, লাভ অ্যাফেয়ার তত্ত্বকেই খারিজ করেছেন।'