ঘোষণা হয়ে গিয়েছে ভোটের নির্ঘণ্ট। ২৭ মার্চ রাজ্যে প্রথম দফার ভোট। তার আগে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে সোমবার কালীঘাটে বৈঠক করে তৃণমূল। দলের নির্বাচন কমিটি এই বৈঠকে প্রার্থীদের খসড়া তালিকা চূড়ান্ত করে। কমিটির প্রধান তথা তৃণমূল সুপ্রিমো চূড়ান্ত করবেন দলীয় প্রার্থী তালিকা। এদিনের বৈঠকের পর এমনটাই জানান দলের সাংসদ সৌগত রায়। যদিও একটা গুঞ্জন রটেছিল সোমবার ঘোষিত হতে পারে দলের প্রথম পর্বের প্রার্থী তালিকা। কিন্তু সেই গুঞ্জনে জল ঢেলেছেন প্রবীণ সেই তৃণমূল সাংসদ।
তবে জানা গিয়েছে, অনেক বিদায়ী বিধায়ক এবার ঘাসফুল প্রতীকে প্রার্থী হবেন না। সেক্ষেত্রে অশীতিপর ও অসুস্থ বিধায়কদের প্রার্থী না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল হাইকমান্ড। সেই জায়গায় প্রার্থী হতে পারে একাধিক তরুণ মুখ। এমনটাই দলীয় সূত্রে খবর। অর্থাৎ অভিজ্ঞতার সঙ্গে তারুণ্যের মিশেল দেখা যেতে পারে এবারের প্রার্থী তালিকায়। কালীঘাট সূত্রে এমনটাই খবর। জানা গিয়েছে, বর্তমানে তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা ২০৭।
এবার উল্লেখ্যযোগ্য ভাবে বাদ যেতে পারেন সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, শিবপুরের বিধায়ক জটু লাহিড়ী, বাসন্তীর বিধায়ক গোবিন্দ নস্কর ও হাওড়া দক্ষিণের বিধায়ক ব্রজমোহন মজুমদার। এঁদের প্রত্যেকেই অশীতিপর। তাই নেতৃত্ব মনে করছে, এমন প্রবীণ বিধায়কদের বিশ্রাম দিয়ে, তুলনামূলক ভাবে নতুনদের সুযোগ দেওয়া হোক। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এ বারের নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান। তিনি জানিয়েছেন, আমি বালিগ়ঞ্জেই প্রার্থী হতে চাই। কিন্তু দল যদি আমায় প্রার্থী করে তবেই আমি ভোটে দাঁড়াব। তবে তৃণমূলের এক প্রবীণ বিধায়ককে টিকিট দিতে নারাজ দল। কিন্তু ওই বিধায়কের ঘনিষ্ঠ শিবিরের এক ব্যক্তির কথায়, ‘দাদাকে যদি দল টিকিট না দেয়, তবে আমরা দাদাকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করাব।’
এখানেই ফের দলবদলের আশঙ্কা করছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের আশঙ্কা, ‘যারা টিকিট পাবেন্ না, তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিতে পারনে প্রার্থী হয়ার আশায়।‘ তবে বহুদিন ধরে দলের রাজ্যের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই তথা স্থানীয় বিদায়ী বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। পাশাপাশি সরকারি ঘোষণার আগেই প্রার্থী হিসেবে নিজের নামে দেওয়াল লিখে বিপত্তি বাড়িয়েছেন প্রবীণ তৃণমূল বিধায়ক জটু লাহিড়ি।
অপরদিকে, পরিষদীয় রাজনীতি থেকে বিদায় চেয়ে মমতাকে চিঠি লিখেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক রবিরঞ্জন মৈত্র। তাই চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা তৈরি আগে এই বিষয়গুলোকেই হাতিয়ার করছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
এদিকে, এদিন প্রথম দুটি দফায় ভোটের জন্য প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসেছিল বিজেপি। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে বাইপাসের ধারে একটি পাঁচতারা হোটেলে হয়েছে এই বৈঠক। সেই বৈঠকে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপি সাংসদরা।