রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দিলেন তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী। রাজ্যসভায় দাঁড়িয়েই দলের বিরুদ্ধে এদিন অসন্তোষ ব্যক্ত করেন তিনি। বলেন, 'দলে দম বন্ধ হয়ে আসছে। এটাই অবস্থান নেওয়ার সেরা সময়। আর চুপ থাকা যাচ্ছে না। বাংলায় হিংসা হচ্ছে। আমার খারপ লাগছে। আমি ভাবছি এখানে বসে কি করব? তাই সেখানে গিয়েই কাজ করা ভাল বলে মনে করছি। এজন্য রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দিচ্ছি।'
নিজের বক্তব্যে দীনেশ ত্রিবেদী বলেন, 'দেশ, নাকি দল ও ব্যক্তি আগে। অন্তরাত্মার আমাকে বলছে দেশ সবার ঊর্ধ্বে। ভারতে দিকে তাকিয়ে গোটা বিশ্ব। কোভিড মোকাবিলাই তার প্রমাণ।' অর্থাৎ মোদী সরকারের কোভিড মোকাবিলাকে প্রশংসা করেছেন তৃণমূলের এই সাংসদ। রেলমন্ত্রী থাকাকালীনও তাঁর জীবনে এই ধরণের মূহুর্ত এসেছিল বলে জানান দীনেশবাবু। উল্লেখ্য, রেলমন্ত্রী হয়ে জনমোহনীর বদলে সংস্কারমুখী বাজেট করেছিলেন দিনেশ ত্রিবাদী। যা পছন্দ হয়নি তৃণমূল নেত্রীর। এরপরই রেসমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করেন দীনেশ ত্রিবেদী।
রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন দীনেশ। গতবারের লোকসভা নির্বাচনে ব্যারাকপুর কেন্দ্রে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া অর্জুন সিংয়ের কাছে হেরে যান দীনেশ। এরপরই তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠায় তৃণমূল কংগ্রেস। সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরই দীনেশের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা তৈরি হল।
নিজের ইস্তফার কথা বলতে গিয়ে এদিন রাজ্যসভায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ক্ষুদিরাম বসুর কথা তুলে ধরেন তৃণমূল সাংসদ। তারপরই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা বলেন। গতকালই প্রধানমন্ত্রী মোদীর একটি টুইট রিটুইট করে নিজের সম্মতির কথা জানিয়েছিলেন এই তৃণমূল সাংসদ।
যদিও তাঁকে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারপার্সন। দীনেশের ইস্তফা ঘোষণার পরই তাঁকে বিজেপিতে স্বাগত জানান রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। 'উনি বিজেপিতে আসলে খুব খুশি হব' বলে জানান লোকসভায় ব্যারাকপুরে দিনেশের প্রতিপক্ষ বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং।
ভোটের মুখে অচমকাই রাজ্যসভার সাংসদের দলত্যাগকে 'দুর্ভাগ্যজনক' বলেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগাম আভাস দীনেশ ত্রিবেদী দেননি বলেই দাবি বর্ষীয়ান রাজনীতিকের। সৌগত রায় বলেছেন, 'ভোটের আগে এই পদক্ষেপ ভাল হল না। গত রবিবারই দিল্লি থেকে একই বিমানে দীনেশের সঙ্গে ফিরেছি। আগেও অসন্তোষ ব্যাক্ত করেছিলেন উনি। তবে এই বিষয়টি যে এতটা তা আন্দাজ করতে পারিনি।' দলীয় সাংসদের ইস্তফাকে 'নজিরবিহীন' বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার আেক সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন