ছেলে শুভেন্দু বলেছিলেন, কাঁথিতে মোদীর সভাতেই বিজেপিতে আসছেন বাবা শিশির অধিকারী। তবে যা শোনা যাচ্ছে, রবিবার এগরায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাতেই পদ্মে আগমন হতে পারেন কাঁথির তৃণমূল সাংসদের। রবিবারের সভায় আমন্ত্রণ জানানোর জন্য এদিন কাঁথির 'শান্তিকুঞ্জে' যান কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী। সূত্রের খবর, সভায় থাকার ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছেন শিশির। তাতেই জল্পনা তুঙ্গে, রবিবারই বিজেপিতে যোগদান করতে পারেন তিনি।
শুভেন্দুর দলবদলের পর থেকে বয়সের কারণ দেখিয়ে অশীতিপর শিশিরকে দলের একাধিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল। বদলে দলীয় রাজনীতিতে অধিকারীদের বিপক্ষ শিবিরের নেতাদের দলের নানা সাংগঠনিক পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কাঁথিতে প্রচারে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করে চড়া সুরে আক্রমণ শানান যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। যা আদতে বর্ষীয়ান সাংসদকেই কদর্য আক্রমণ বলে তুলে ধরছে গেরুয়া বাহিনী।
এরপর নন্দীগ্রামের মতো হাইভোল্টেজ কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়তে শুভেন্দুকে প্রার্থী করে বিজেপি। তারপরই শিশিরবাবু ছেলের হয়ে প্রচারের কথা জানিয়েছিলেন আকারে-ইঙ্গিতে। নন্দীগ্রামে তৃণমূলের পরাজয় একপ্রকার নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন তিনি। দিন কয়েক আগেই বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় কাঁথিতে শিশির অধিকারীর বাড়িতে গিয়ে মধ্যাহ্নভোজন সারেন। সেখানেই বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদকে মোদীর সভায় উপস্থিত থাকার কথা জানিয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর।
তৃণমূল তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে দাবি করেছেন কাঁথির সাংসদ। তাঁর কথায়, ‘এখানে গভীর বন্দর করবে বলেছিল। করেনি। দু’দিন আগে জাহাজ মন্ত্রী এসে বলেছেন, বন্দর করে দেব। নিতিন গডকড়ি এসেও একই কথা বলেছেন। আমি গভীর বন্দর চাই। যেখানে আমাদের ঘরের ছেলেমেয়েদের চাকরি হবে। রাজ্য সরকার বলেছিল গভীর বন্দর করবে, কিন্তু তা তো করতে পারবে না। ছোট বা মাঝারি বন্দর করতে পারবে। তাতে আমাদের কী হবে? পুরোটাই প্রতারণা।’
বুধবার চণ্ডীপুরের সভা থেকে শুভেন্দু আভাস দিয়েছিলেন, ২৪ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা নয়। রবিবারই অমিত শাহের সভাতে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন শিশিরবাবু। তারপরই এদিন শান্তিকুঞ্জে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বেশ কিছুক্ষণ ছিলেন তিনি সেখানে। শাহের সভায় থাকার জন্য আমন্ত্রণপত্র দিয়ে আসেন তিনি। সূত্রের খবর, শিশিরবাবুও সভায় আসার সম্মতি জানিয়েছেন। সব ঠিক থাকলে রবিবারই দীর্ঘদিনের তৃণমূল সাংসদ বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। তবে তমলুকের সাংসদ বাড়ির সেজো ছেলেও কি রবিবার শাহী সভায় থাকবেন কি না তা জানা যায়নি।