বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের পর শুক্রবার সকালে হাথরাস যাওয়ার মাঝপথেই তৃণমূল কংগ্রেসকে আটকাল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ প্রসাসন। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বে জোড়া-ফুল শিবিরের এক প্রতিনিধি দল এ দিন হাথরাসে প্রবেশের চেষ্টা করে। তখনই তাঁদের আটকে দেয় যোগী সরকারের পুলিশ। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের বচসা, ধস্তাধস্তি। অভিযোগ, পুলিশের ধাক্কায় রাস্টায় পড়ে যান তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন।
Trinamool Congress MPs -
Derek O'Brien, Dr Kakoli Ghosh Dastidar and Pratima Mondal - stopped from entering Hathras. @IndianExpress pic.twitter.com/gdjtMTDSiM— Manoj C G (@manojcg4u) October 2, 2020
এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রতিমা মণ্ডল ও প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। দিল্লি থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার যাত্রার হাথরাসে ঢোকার ঠিক দেড় কিলোমিটার আগে আটকে দেওয়া হয় এই প্রতিনিধি দলকে। সেখানে বিশাল পুলিশবাহিনী আগে থেকেই মোতায়েন ছিল। তৃণমূল প্রতিনিধিরা পুলিশকে জানান, তাঁরা শুধুমাত্র নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের সমবেদনা জানাতে যাচ্ছেন তাঁরা। অভিযোগ তা সত্ত্বেও সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি পুলিশ।
কেন তাঁদের নির্যাতিতার গ্রাম হাথরাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না? এই প্রশ্নেই পুলিশের সঙ্গে রীতিমত বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। চলে ধস্তাধস্তি। প্রতিবাদ জানিয়ে এক সময় রাস্তায় বলে পড়েন প্রতিমা মণ্ডল, মমতাবালা ঠাকুররা। সোচ্চা তাঁদের বলতে শোনা যায়, 'মৃতার পরিবারতে সমবেদনা জানাতে আমরা শান্তিপূর্ণবাবেই হাথরাসে যাচ্ছিলাম। বিধি মেনেই পৃথ পৃথকভাবে যাচ্ছিলাম আমরা। আমাদের কাছে অস্ত্রও নেই। তাহলে কেন আমাদের যেতে দেওয়া হবে না?। নির্বাচিত সাংসদদের আটকানো হচ্ছে- কী ধরণের জঙ্গলরাজ চলছে সেখানে? মাত্র দেড় কিমি আগে আমাদের আটকানো হয়েছে, পুলিশকে বলেছি আমরা হেঁটেই সেখানে যাব।'
উল্লেখ্য, হাথরাসের ঘটনাকে তুলে ধরে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হন বাংলা মখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই শুক্রবার সকালেই তৃণমূলের প্রতিনিধি দল হাথরাসের উদ্দেশে রওনা হয়।
আরও পড়ুন- হাথরাসকাণ্ডে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের এলাহাবাদ হাইকোর্টের, সরকারি আমলাদের ব্যাখ্যা তলব
বৃহস্পতিবারই উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে যাওয়ার পথে আটকানো হয়েছিল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও দলের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়াকে। তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। পরে উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লিতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিও হয় কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের। মাটিতে পড়ে যান রাহুল গান্ধীও। কোভিড পরিস্থিতিতে আইন লংঘনের জন্য রাহুলদের বিরুদ্ধে মহামারী আইনে মামলা করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
এদিকে, হাথরাসকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করেছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। পুলিশের বিরুদ্ধে নিহতের দেহ পরিবারের সম্মতি ছাড়া তাড়াহুড়ো করে সৎকারের যে অভিযোগ উঠে আসছে তা কেন করা হল খতিয়ে দেখতেই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে আদালত। ১২ অক্টোবর আদালতে শরীরে উপস্থিত হয়ে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন ও পুলিশের শীর্ষস্থানীয় অফিসারদের ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন