তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন জেলা সভাপতি আসার পর দক্ষিণ দিনাজপুরে শুদ্ধিকরণের প্রক্রিয়া চলছে। জেলা পরিষদে বসে কাটমানির গল্প নিয়ে অভিযোগ ওঠায় তোলপাড় হয়েছিল উত্তরবঙ্গ। নতুন সভাপতি যে চারজনকে শোকজ করেছিলেন তার মধ্যে একজন জবাব দিয়েছেন। বাকি তিনজনের জবাবের অপেক্ষায় রয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলের জেলা সভাপতি গৌতম দাস।
বিগত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির জয়ের পর উত্তরবঙ্গে সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে ঘাসফুল শিবির। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট লোকসভা আসনও হারাতে হয় তৃণমূলকে। জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় ওই আসনের পরাজিত প্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে। দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে থাকে একাধিক তৃণমুল নেতার বিরুদ্ধে। গত ২৩ জুলাই নতুন জেলা সভাপতি করা হয় গঙ্গারামপুরের বিধায়ক গৌতম দাসকে। সভাপতি হওয়ার পর থেকে তিনি দলের শুদ্ধিকরণের কাজ শুরু করেছেন। এরইমধ্যে বিজেপি থেকে দলে ফিরে আসেন দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র।
সম্প্রতি জেলার চার শীর্ষ নেতাকে শোকজ করে তৃণমূল। জেলার শীর্ষস্তরের নেতা শুভাশিস পাল, দেবাশিস মজুমদার, সুনির্মল জ্যোতি বিশ্বাস ও কুমারগঞ্জের প্রাক্তন যুব সভাপতি অভিষেক গুহ, এঁদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। জানা গিয়েছে, একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় প্রথম তিন জনকে ২১ দিন সময় দেওয়া হয়েছে শোকজের জবাবের জন্য। ইতিমধ্যে অভিষেক গুহ শোকজের জবাব দিয়েছেন। সূত্রের খবর, দুর্নীতি ও বেআইনি কাজের সঙ্গে আর কারা যুক্ত সে বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। প্রমান মিললে কাউকেই রেয়াত করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে দল।
জেলা সভাপতি গৌতম দাস বলেন, "মোট চারজনকে শোকজ করা হয়েছে। তার মধ্যে অভিষেক গুহ শোকজের জবাব দিয়েছেন। আমরা বাকি তিনজনের জবাবের জন্য অপেক্ষা করছি। ৭ দিন সময় দিয়েছিলাম অভিষেককে। বাকি তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনেক বেশি থাকায় সময় বেশি দেওয়া হয়েছে। তবে এই তিনজনকে বলা হয়েছে এখন দলের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক না রাখতে। একইসঙ্গে দলের হয়ে কিছু না বলতে। বাকিরা জবাব দিলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে রাজ্য কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেব।" দুর্নীতির অভিযোগ বা শোকজের বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি কুমারগঞ্জের প্রাক্তন যুব সভাপতি অভিষেক গুহ। তিনি বলেন, "এগুলি একেবারে দলের অভ্যন্তরীন বিষয়। দলীয় নেতৃত্ব আমার কাছে জানতে চেয়েছে তাই জবাব দেব।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন