"জামার কলার ধরে শুধু ধাক্কা দেয়নি। আমার পিঠে পড়েছে যথেচ্ছ কিল, চড়। কোনওরকমে তা সহ্য করেছি। মঙ্গলবার আর বাড়ির বাইরে বের হইনি। শরীর এখনও বেশ দুর্বল লাগছে।" রীতিমতো কষ্ট করেই কথাগুলো বলে গেলেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী তথা প্রবীণ তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "চিকিৎসক কড়া ডোজের ওষুধ দিয়েছে। সঙ্গে ঘুমের ওষুধও দিয়েছে।" সবশেষে তিনি জানান, আজ (বৃহস্পতিবার) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে পুরো বিষয়টা জানাবেন।
পাড়ায় পাড়ায় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব দেখানোর সময় রাস্তার আলো জ্বালানোকে কেন্দ্র করেই গন্ডগোলের সূত্রপাত বলে খবর। সেই ঝামেলাতে জড়িয়ে পড়েন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল সাংসদ মালা রায়। দুই তরফেই স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেছে। ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মালা রায়। তাঁর সমর্থকরাই আলো জ্বালিয়ে দেন বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: এসইউসির নবান্ন অভিযান থমকাল সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে, যুব মোর্চার অভিযান কুড়ি মিনিটেই শেষ
তবে শোভনদেববাবুর অভিযোগ, "মালা রায় লোক পাঠিয়ে দিয়ে এই কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন। এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন কখনও হইনি। যারা এসব করেছে, তারা সকলেই আমার পরিচিত। ইচ্ছে করে চারবার আলো জ্বালিয়ে দেয় সিনেমা বন্ধ করার জন্য। আমি প্রথম তিনবার কিছু বলিনি। বারবার তোমরা সিনেমা বন্ধ করছ কেন? এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই আমার জামার কলার ধরে ধাক্কা দেয়। এরপর পিছন থেকে কিল চড় ঘুষি সবই চলতে থাকে। তারপর মেয়েরা গালমন্দ করতে থাকে।"
তবে রাজ্যের মন্ত্রীর সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর ও সাংসদ মালা রায়। তিনি সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, সরকারি অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়ার কোনও কারণ নেই। ওঁর ব্যক্তিগত ক্রোধের জন্য এসব বলছেন। এখানকার সমস্ত কিটক্যাট ভেঙে দিয়ে লাইট অফ করে দিয়েছে। উনি নিজে মেরেছেন কি না তা পুলিশ বা সিসিটিভি বলবে।
আরও পড়ুন: শবরীমালা: মহিলাদের প্রবেশাধিকারের ইস্যু সাত বিচারপতির বেঞ্চে পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট
এই ঘটনা কি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছেন? শোভনবাবুর বক্তব্য, "আমাকে ফোন করেনি। বসিরহাট গিয়েছে, ব্যস্ত রয়েছেন। আমি তাই ফোন করে বিরক্ত করিনি। আমি ববিকে (মেয়র ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম) দু'বার জানিয়েছি। ববি নিজে দুঃখপ্রকাশ করেছে। কাল দেখা করে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিষয়টি জানাব।"
মন্ত্রী ও সাংসদের এই কোন্দলে ঘোর অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। মালা রায়ের প্রতি ক্ষোভ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, "কাউন্সিলর মানে ওই এলাকার জমিদার নাকি। ওর অনুমতি নিয়ে করতে হবে। আমি কর্পোরেশনের যা নিয়ম তা মেনে করেছি। যাদের জানানো দরকার তাঁদের জানানো হয়েছে।"