/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/12/mamata-759-new-1-1.jpg)
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।
সিএএ, এনআরসি ও এনপিআর নিয়ে লাগাতার প্রশিক্ষণ শিবির শুরু করেছে তৃণমূলের উদ্বাস্তু সেল। রাজ্য়ের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রেই এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে ৫টি বিধানসভা ক্ষেত্রে কর্মশালা সম্পন্ন হয়েছে। আর এই সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে মমতার মূল ভরসা মুকুল বৈরাগ্য। তৃণমূলের উদ্বাস্তু সেলের চেয়ারম্যান মুকুল বৈরাগ্যের দাবি, "প্রতিটি কর্মশালায় এক হাজার যুব হাজির থাকছেন। তাঁরা প্রশিক্ষণ নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করবেন।"
সিএএ, এনআরসি এবং এনপিআর নিয়ে রাজ্যজুড়ে আন্দোলনে ঝড় তুলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু রাজনৈতিক বিরোধিতাই নয়, লোকসভায় সিএএ পাশ হলেও পরিষদীয় প্রক্রিয়ায় বিরোধী প্রস্তাব এনে এবং তা পাশ করিয়েও মুখ্যমন্ত্রী বিরোধিতা জারি রেখেছেন। এনপিআর-এর কাজও বন্ধ রয়েছে রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, "এনপিআরের মধ্যে এনআরসি-র উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে।" একসময়ের ছিন্নমূল মানুষগুলোর মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতে তাই তৃণমূল তৈরি করেছে উদ্বাস্তুদের সংগঠন। এবার এই নতুন সংগঠনের ওপরই ভরসা রাখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: মমতাকে লেখা হাজার খানেক চিঠি নবান্নে!
২৩ জানুয়ারি কোচবিহারের দিনহাটায় প্রথম কর্মশালাটি করেছে তৃণমূলের উদ্বাস্তু সেল। উত্তরবঙ্গে মোট চারটি বিধানসভা ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ শিবির করেছে তারা। দক্ষিণবঙ্গের কুপার্স ক্যাম্পেও হয়েছে শিবির। তৃণমূল উদ্ধাস্তু সেলের পশ্চিমবঙ্গের চেয়ারম্যান মুকুল বৈরাগ্য বলেন, "আমাদের সদ্য গঠিত এই সেল ইতিমধ্যে রাজ্যে পাঁচ জায়গায় কর্মশালা করেছে। সেই সব কর্মশালায় যুবদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সিএএ, এনআরসি ও এনপিআর নিয়ে সম্যক ধারণা দেওয়া হচ্ছে। কীভাবে বিজেপির প্রচারের বিরোধিতা করা হবে তা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যাও দেওয়া হচ্ছে, যাতে প্রশিক্ষিতরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষকে বোঝাতে পারেন।"
আরও পড়ুন: ‘এখনও মন্ত্রীর চেয়ারে বসে!’ অবাক মমতা
কর্মশালায় মূলত কী বোঝানো হচ্ছে? মুকুল বলেন, "বিজেপি ভুল প্রচার করে বলছে, 'আমরা আপনাদের নাগরিকত্ব দিলাম।' তৃণমূল কংগ্রেস এরই বিরোধিতা করছে। সেটাই মানুষকে বোঝাচ্ছি, কেন বিরোধিতা করা দরকার। আমরা মানুষকে বলছি, সিএএ-র মধ্য়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথাটা কোথায় লেখা আছে। এখানে বলা হয়েছে আবেদন করতে হবে। যাঁরা ভোট দিয়ে সাংসদ বানিয়েছে তাঁরা আবার কেন আবেদন করবে নাগরিকত্বের জন্য? তাহলে তাঁকে বলতে হবে আমি বিদেশি। বিদেশি দ্বারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। আমরা কর্মশালায় আইনগত ধারণা দিচ্ছি।"
স্বাধীনতার পরবর্তীকালে এ রাজ্যে ছিন্নমূলবাসীদের জন্য় বিভিন্ন কলোনি গড়ে তুলেছিল সরকার। ১৯৭১-এ বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়ার পরও লক্ষ লক্ষ মানুষ এ দেশে এসেছেন। একসময় উদ্বাস্তুদের মধ্যে সিপিএমের প্রভাব ছিল প্রশ্নাতীত। এরইমধ্যে মতুয়ারা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গিয়েছে। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মমতাবালা ঠাকুর পরাজিত হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের কাছে। মতুয়ারাও সেভাবে সিএএ বিরোধীতায় প্রচার করছে না। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই প্রেক্ষাপটে উদ্বাস্তু সংগঠন গড়ে তোলা তৃণমূলের কাছে প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছিল। কারণ, মতুয়াদের একটা অংশ সিএএ-কে সরাসরি সমর্থন করছে। ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে তাঁরা বিজেপির মিছিলে পা মিলিয়েছেন। তৃণমূলের এই সংগঠনের দাবি, উদ্বাস্তু এলাকা ছাড়াও যেখানে সিএএ, এনআরসি নিয়ে বেশি ভুল বোঝানো হচ্ছে, সেখানে প্রচার চলছে। বলা হচ্ছে, এই আইনের কোনও প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু, মানুষের সাড়া কি পাওয়া যাচ্ছে? মুকুলবাবুর তাৎক্ষণিক জবাব, "দুর্দান্ত ফল পাচ্ছি।"