বঙ্গ বিজয়ের লক্ষ্যে মনমোহিনী ইস্তেহার প্রকাশ করেছে বিজেপি। ইস্তেহারের বদলে একে সংকল্প পত্র নাম দিয়েছে গেরুয়া শিবির। মহিলা, মতুয়া, কৃষক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে একাধিক প্রতিশ্রুতি-খরচের অঙ্গীকার করেছে বিজেপি। রবিবার সল্টলেকের ইজেডসিসি-তে সেই সংকল্প পত্র প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিছুক্ষণ পরেই এই ইস্তেহারকে তীব্র কটাক্ষ করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রত্যেকটি প্রতিশ্রুতিকে জুমলা বা ভাঁওতা বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।
তিনি তৃণমূল ভবনে এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রথমেই অভিযোগ করে বলেন, "বিজেপি তৃণমূলকে অনুসরণ ও অনুকরণ করছে। প্রার্থী তালিকা পূর্ণাঙ্গ প্রকাশ করেছি আমরাই। ওরা ধাপে ধাপে প্রার্থী ঘোষণা করছে। আমরা আগে ইস্তেহার প্রকাশ করেছি। ওরা আজ করল। তৃণমূলের উপর নির্ভরশীল হয়ে গেছে বিজেপি। ১৫ লক্ষ টাকা সবার অ্যাকাউন্টে দেবে বলেছিল, বছরে ২ কোটি চাকরি দেবে বলেছিল, তার কিছুই গত সাত বছরে করেনি। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কেন্দ্রীয় আইন, এর জন্য রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমতির প্রয়োজন কী আছে? আসামে এনআরসি করে ১৭ লক্ষ হিন্দু বাঙালিকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়েছে। ওঁদের প্রতিশ্রুতির কোনও মূল্য নেই।"
আমফানের ত্রাণের টাকা নিয়েও বিজেপিকে খোঁচা দিয়েছেন সৌগত রায়। বলেছেন, "আমফানে ক্ষয়ক্ষতির জন্য ১০০০ কোটি টাকা দিয়েছিল মাত্র। কোভিডের জন্য মাত্র ১৫০ কোটি টাকা সাহায্য করেছিল কেন্দ্র। জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ লক্ষ কোটি টাকা বঞ্চনা রয়েছে বাংলার। এই সোনার বাংলা গড়ার দাবি করছে, কিন্তু কীভাবে? সোনার বাংলা কি বহিরগত নেতাদের হাতে তৈরি হবে? নারী ক্ষমতায়নের যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা সব জাল। আসামে-উত্তরপ্রদেশে মহিলাদের সম্মান কোথায় খবর নিলেই জানতে পারবেন। হাথরস-উন্নাওতে মেয়েদের উপর অনেক অত্যাচার হবে।"
মনীষীদের নামে ফাউন্ডেশন, পুরস্কার নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন বর্ষীয়ান সাংসদ। বলেছেন, "যাঁরা রবীন্দ্রনাথের জন্মস্থান জানে না, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙে তাঁদের মুখে বাংলার মনীষীদের কথা মানায় না। বাংলায় ৬৯ লক্ষ মেয়েকে কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় সুবিধা দিয়েছে রাজ্য সরকার। রাষ্ট্রসংঘেও পুরষ্কৃত করা হয়েছে কন্যাশ্রী প্রকল্পকে। উত্তরপ্রদেশ-বিহার-কর্ণাটক-মধ্যপ্রদেশে কেন মহিলাদের বাস যাত্রা বিনামূল্যে করতে পারল না কেন? তৃণমূলের নকল করে অন্নপূর্ণা ক্যান্টিন চালু করার কথা বলছে। ইতিমধ্যেই মা ক্যান্টিন চালু করেছে রাজ্য সরকার। অমিত শাহ বাংলার জন্য প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, কিন্তু বাংলায় সেটা বলতে পারলেন না।"