একুশের মহারণের মুখে বঙ্গ রাজনীতিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ঘিরে রাজনৈতিক টানাপোড়েন তুঙ্গে। বিশ্বভারতীর শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে কবিগুরুর পরিবার সম্পর্কে ভুল তথ্য় পেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, এমন অভিযোগই করল তৃণমূল। মোদীর ভাষণ শেষের পরই ব্রাত্য় বসু বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথের পরিবার সম্পর্কে ভুল তথ্য় পেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মেজদাকে (সত্য়েন্দ্রনাথ ঠাকুর) বলেছেন বড়দা। জ্ঞানদানন্দিনী উচ্চারণ ভুল করেছেন’’।
মোদীকে নিশানা করে ব্রাত্য় এদিন আরও বলেন, ‘‘ওঁর মুখে বারবার কেন গুজরাত এল বুঝতে পারলাম না। ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়ে কেন বারবার গুজরাতের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের যোগযোগ নিয়ে কথা বলতে উৎসাহী। উনি তো বিশ্বকবি। জ্ঞানদানন্দিনী দেবীকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শাড়ির আঁচলের প্রসঙ্গ যা বলেছেন, তা অর্ধসত্য় কথা। গুজরাতি মহিলাদের পাশাপাশি পার্সি মহিলাদের থেকেও শিখেছিলেন শাড়ির আঁচল ফেলার কায়দা। অথচ পার্সি মহিলাদের নাম নিলেন না প্রধানমন্ত্রী’’।
স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদানের কথা বলতে গিয়ে কেন কলকাতা বিশ্ববিদ্য়ালয়ের নাম নেননি প্রধানমন্ত্রী, তা নিয়েও সরব হয়েছেন ব্রাত্য়।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গুজরাত-যোগ নিয়ে এবার মুখ খুললেন মোদী
কবিগুরুর গুজরাত যোগ প্রসঙ্গে মোদী কী বলেছেন?
এদিন মোদী বলেন, ‘‘গুরুদেবের বড় ভাই সত্য়েন্দ্রনাথ ঠাকুর আইসিএসে ছিলেন যখন, ওঁর নিয়োগ গুজরাতের আহমেদাবাদে হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রায়শই গুজরাত যেতেন। ওখানে বেশ লম্বা সময় কাটিয়েছেন। আহমেদাবাদে থাকাকালীন ‘বন্দি ও অমর ’ ও ‘নীরব রজনী দেখো’ লিখেছিলেন। ক্ষুধিত পাষাণের একটা অংশ ওখানে লিখেছিলেন উনি…সত্য়েন্দ্রনাথের স্ত্রী জ্ঞানেন্দনী দেবী (পড়ুন, জ্ঞানদানন্দিনী দেবী) যখন আহমেদাবাদে ছিলেন, তখন দেখলেন, স্থানীয় মহিলারা শাড়ির আঁচল ডানদিকে রাখতেন। এর ফলে কাজ করতে মহিলাদের সমস্য়া হত। বাঁ দিকে শাড়ির আঁচলের প্রচলন উনিই চালু করেন, লোকে তাই বলে’’।
উল্লেখ্য়, বিধানসভা নির্বাচনের মুখে বারবার মোদীর মুখে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম শোনা গিয়েছে। এদিন বিশ্বভারতীর অনুষ্ঠানে তার ব্য়তিক্রম ঘটেনি। সম্প্রতি বোলপুরে পা রেখেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বোলপুরে শাহের ছবির নীচে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি দিয়ে হোর্ডিং ঘিরে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আবার,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মস্থান বিশ্বভারতী বলে বঙ্গ বিজেপির টুইট ঘিরেও বিতর্ক হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে এদিন মোদীর ভাষণে যেভাবে ‘ভুল’ ধরল তৃণমূল, তা রাজনৈতিকভাবে নয়া মাত্রা পেল বলেই মনে করা হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন