ছিলেন বিজেপির টেকনিকাল কমিটির আহ্বায়ক। এমনকী ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে, এবং পরাজিত হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থীর দ্বারা। আর আজ বিজেপিকে টেক্কা দিতে সেই কর্ণেল দীপ্তাংশু চৌধুরীর নেতৃত্বেই চাঙ্গা করা হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের সাইবার সেলকে।
বিধানসভায় লড়াইয়ের পর ছেড়েছিলেন বিজেপি। এমনকী বুধবারের প্রশিক্ষণ শিবিরে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন বলেছেন, "ছ'মাস আগে দীপ্তাংশু চৌধুরীকে চিনতাম। লোকে বলছেন উনি বিজেপি করতেন। তাতে কী হয়েছে?"
লোকসভা নির্বাচনের আগে রীতিমত সাইবার যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে। গেরুয়া শিবিরের সাইবার সেলের কাছে গোলের পর গোল খাচ্ছে তৃণমূল। এবার সেই গোল শোধ করতে রীতিমত ঘটা করে মৌলালী যুব কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ শিবির করল তৃণমূল কংগ্রেস। বুধবার মৌলালী যুব কেন্দ্রে ২৪৮ জন অংশ নেন প্রশিক্ষণ শিবিরে। তৃণমূল সূত্রে খবর, শুধু এই রাজ্যের বুথ স্তরে নয়, দিল্লিতেও সাড়া ফেলতে চায় দলের সাইবার শাখা। কারণ, সর্বভারতীয় স্তরে দলের প্রচার বাড়াতে এই সেলকে আরও সক্রিয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বুধবারের প্রশিক্ষণ শিবিরে টেকনিকাল, রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, আগামী অক্টোবরের মধ্যে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং টুইটারের মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছনোর লক্ষ্য স্থির করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের প্রায় এক হাজার সদস্য এই প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধানে থাকবেন।
রাজ্যে সাংগঠনিক দিক থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ে এখনো কয়েক যোজন পিছিয়ে বিজেপি। মাঠে-ময়দানের রাজনৈতিক প্রচারে ধারে-কাছে নেই বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস কেউই। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেস কোর কমিটির বর্ধিত সভা বসছে নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। তার আগে অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস সোশ্যাল মিডিয়া কনক্লেভ-এ টার্গেট স্থির করা হল ১০ হাজার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করার। প্রতি গ্রুপে ধরা হয়েছে ২৫৬ জন করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কী রণকৌশল নেওয়া হবে তা নিয়ে বিস্তারিত প্রশিক্ষণ চলল দিনভর। বাংলাদেশের ঘটনা কী ভাবে কলকাতার সঙ্গে জুড়ে দিয়ে রং চড়িয়ে প্রচার করা হয়, তা আটকানোর কৌশল কী, শেখানো হয় শিবিরে। সূত্রের খবর, অংশগ্রহণকারীদের কুইজের মাধ্যমে নানা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলে দেখা যায় অনেকেই সঠিক উত্তর দিতে পারছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আয়োজক বলেন, “আমাদের প্রধান কাজ বিজেপির মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরগুলোর খণ্ডন করা। এই শিবিরে বিভিন্ন স্লাইড শোতে দেখানো হয়েছে কী ভাবে বিকৃত খবরকে সত্য বলে প্রচার করা হয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করা হয়। তার পাল্টা প্রচারের ওপর আমরা জোর দিচ্ছি। পাশাপাশি প্রশাসনকে জানানোর ব্যাপারেও উদ্যোগ নেওয়া হবে।"
সূত্রের খবর, এই রাজ্যে তৃণমূল সরকার সামাজিক ক্ষেত্রে যে সব প্রকল্প চালু করেছে, যেমন কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, ইত্যাদি, সেই সব প্রকল্পের কথা তুলে ধরতে বলা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। শুধু রাজ্য স্তরে নয়, জেলা, ব্লক এমনকী বুথ স্তরেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে এই ভাবনা। ছড়িয়ে দেওয়া হবে জাতীয় স্তরেও। তৃণমূল কংগ্রেসের সমস্ত শাখা সংগঠনকে কাজে লাগানো হবে এই প্রক্রিয়াতে।