শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ে অভিযোগ রয়েছে বরাবরই। কলেজে ছাত্র ভর্তি নিয়ে এবছর বিস্তর আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগও উঠেছিল। গ্রেপ্তার করা হয় বেশ কয়েকজন ছাত্রকে। বুধবার তৃণমূল ভবনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ কোনও ভাবে বরদাস্ত করা হবে না। কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁর দাবি, কলেজের ভর্তি কেলেঙ্কারিতে যারা জড়িত ছিল, তারা বেশিরভাগই ছিল বহিরাগত। এদিন নতুন কমিটিও ঘোষণা করেছেন তৃণাঙ্কুর। তবে ঘোষিত কমিটি অসম্পূর্ণ। পরবর্তীতে কমিটি নিয়ে আরও ঘোষণা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এই কমিটির মেয়াদ থাকবে আগামী ৩০ আগস্ট পর্যন্ত।
কয়েকটি জেলার সভাপতি পরিবর্তন করা হলেও মূলত বেশিরভাগ জেলার পুরনো সভাপতিদের রেখে দিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। রাজ্য কমিটির ক্ষেত্রেও ব্যাপক পরিবর্তন করা হয়নি। এদিন নতুন কমিটির কথা ঘোষণা করেছেন তৃণাঙ্কুর। ২৮ আগস্ট মেয়ো রোডে দলের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসে নতুন কমিটি গড়ার জন্য দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্য সভাপতি বলেন, "শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে কমিটি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোচবিহার জেলা কমিটি পুরো ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমাদের মনে হয়েছে, বেশ কিছু জেলা কমিটি ভাল কাজ করেছে। তাদের রেখে দেওয়া হয়েছে। পুরনো কমিটির মধ্যে সভাপতি রইলেন উত্তর কলকাতা বিশ্বজিত দে, দক্ষিণ ২৪ পরগণার অমিত সাহা, হুগলির গোপাল রায়, হাওড়া গ্রামীনের হাসিবুল রহমান, হাওড়া শহরের তুষার ঘোষ, পশ্চিম বর্ধমানের কৌশিক মন্ডল, পূর্ব মেদিনীপুরের অন্বেষা জানা, বাঁকুড়ার চুমকি বন্দ্যোপাধ্যায়, মুর্শিদাবাদের ভীষ্মদেব কর্মকার, মালদার প্রসূন রায়, বীরভূমের সুরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। কাজের ওপর ভরসা রেখে এদের রাখা হয়েছে। ভবিষ্যতে এঁরা দলের সম্পদ হিসাবে দেখা দেবেন।"
নতুন জেলা কমিটির সভাপতি হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে নদিয়ার সৌরিক মুখোপাধ্যায়, উত্তর দিনাজপুরের অনুপ কর, পূর্ব বর্ধমানের মহম্মদ সাদ্দাম হোসেন, পশ্চিম মেদিনীপুরের সৌরভ চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ারের সঞ্জয় ঘোষ, সেন্ট্রাল কলকাতার সুকান্ত চক্রবর্তীকে। তবে রাজ্যের বাকি সাতটি জেলা কমিটি একই থাকছে বলে জানিয়ে দিয়েছে টিএমসিপি।
রাজ্য কমিটির সহসভাপতি হিসাবে রয়ে গেলেন মণিশঙ্কর মন্ডল ও রুমেনা আখতার। সাধারণ সম্পাদক গৌতম ভট্টাচার্য, আবির নিয়োগী ও কুনাল সামন্ত থাকলেন। নতুন দুজন হলেন শমীক রায় অধিকারী, সুভাষ চক্রবর্তী। সম্পাদক ওয়াহিদা খাতুন, তীর্থঙ্কর কুন্ডু, বুবাই বোস আগেই ছিলেন। নতুন রাজ্য কমিটি থেকে বাদ গেলেন মৌমিতা গঙ্গোপাধ্যায়, জ্যোতি চৌধুরী ও তমোঘ্ন ঘোষ। নতুনদের কাজ শেখানোর জন্যই কমিটিতে পুরোনোদের রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তৃণাঙ্কুর। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই ব্যাপক পরিবর্তন করেনি তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন।