২১-এর বিধানসভার আগে ২২ বছরের ইতিহাসে এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে তৃণমূল। রাজ্যে বাড়ছে বিজেপি। বাংলা দখলে রাখতে টাফ চ্যালেঞ্জ জোড়া-ফুল শিবিরের। কিন্তু দলনেত্রী ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিলেও ভাঙছে তৃণমূল। দলের একের পর এক নেতা, বিধায়ক দল ছাড়ছেন। মুখে এই দলত্যাগীদের পাত্তা দিতে নারাজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্টে 'বেসুরো'দের গত কয়েকদিন রাজনৈতিক সভা থেকে কড়া বার্তা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু, তাতে যে চিঁড়ে ভিজবে না তা ভালমতই জানেন সুপ্রিমো। তাই এবার তড়িঘড়ি বৈঠকের ডাক দিয়েছেন তৃণমূলের নেত্রী। সমস্যা সমাধান ও প্রভাবশালী নেতাদের অনুপস্থিতিতে আগামিতে দলের কর্মসূচির রূপরেখা নির্ণয়ে আজই বিকেলে বৈঠকে বসছে তৃণমূল হাইকম্যান্ড।
সূত্রের খবর, দলের ভাঙন ঠেকানোর রাস্তা খুঁজতেই কালীঘাটের বাড়িতে শুক্রবার বিকেলে জরুরি এই বৈঠক ডেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরকেও উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। উপস্থিত থাকবেন সুব্রত বক্সি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমের মতো শীর্ষ নেতারাও। এই ভাঙনের সময় দলকে কী করে একসূত্রে বাঁধা যায়, এ দিনের বৈঠকে তারই কৌশল খুঁজবেন তৃণমূল নেত্রী।
আরও পড়ুন- ফের ধাক্কা তৃণমূলের, দল ছাড়লেন আরও এক বিধায়ক
শুভেন্দু অধিকারী, জিতেন্দ্র তিওয়ারি, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও শীলভদ্র দত্ত ইতিমধ্যেই দল ছেড়েছেন। এঁদের প্রত্যেকের জো়ড়া-ফুল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এই প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাহলে কী ২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগেই একাধিক বিধায়ক ও সাংসদ দল ছাড়তে চলেছেন। এখন প্রশ্নটা গিয়ে দাঁড়িয়েছে সেই সংখ্যাটা কত?
ইতিমধ্যেই তৃণমূলের আরও বেশ কয়েকজন বিধায়ক ও সাংসদ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে রীতিমতো বিদ্রোহী। জল্পনা ছড়িয়েছে কমপক্ষে ৫৫ জন বিধায়ক পর্যায়ক্রমে দল ছাড়তে পারেন। শুধু বিধায়কই নয় ৮ জন সাংসদ দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে চলেছেন সেই জল্পনাও ছড়িয়েছে। কারণ, সংখ্যাটা ৮ হলে দলবিরোধী আইনের কোপে পড়তে হবে না ওই সাংসদদের। বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মন্ডল সরাসরি শুভেন্দুর পক্ষে জোরালো সওয়াল করেছেন।
ফলে বিধানসভার আগে পরিস্থিতিতে যে খুব একটা অনুকূলে নেই তা বুঝছেন স্বয়ং নেত্রী। ভোটের মুখে একে-একে দলছুটের সংখ্যা বাড়ায়, অশুভ সংকেত দেখছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই দলের মধ্যে ক্ষোভ প্রশমন করে কী ভাবে ভাঙন রোধ করা যায়, সেই রণকৌশল স্থির করতেই শুক্রবার জরুরি ভিত্তিতে বৈঠকের ডাক বলে মনে করা হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন