তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের মন্তব্যে রীতিমত অস্বস্তিতে শীর্ষ নেতৃত্ব। এমনকী যার কারণে রাজ্যের প্রবীন মন্ত্রী সাধন পান্ডেকে দল শোকজও করেছে। আবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সাধন পান্ডের বিরুদ্ধে একাধিক আক্রমনাত্মক বক্তব্য রাখেন বিধায়ক পরেশ পাল। এরপর আমফান পরবর্তী সময়ে সাগরে না যাওয়ায় নাম না করে শুক্রবার রাজ্যের এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন প্রবীণ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এরপরই দলের সাংগঠনিক বৈঠকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘আজে-বাজে বকা’ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল সভানেত্রী। এর পাশাপাশি ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য রেখে কাজ করতে বলেছেন দলনেত্রী।
আমফান ঝড়ের পর থেকে তৃণমূলের অন্দরে বাক্যবাণীর সাইক্লোন যেন থামছেই না। রাজ্যের ক্রেতা-সুরক্ষা মন্ত্রী বলছেন, কলকাতার পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে। ফিরহাদ পাল্টা বলেছেন সাধন পান্ডের বিরুদ্ধে। ফিরহাদের হয়ে গলা ফাটিয়েছেন দলের বিধায়ক পরেশ পাল। আবার শুক্রবার কেন মন্ত্রী সাগর যাননি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রবীন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের মতে, এসব মন্তব্যে তৃণমূল কংগ্রেস বেশ বিড়ম্বনায় পড়ছে। তাই মন্তব্যে রাশ টানতে এবার শক্ত হাতে হাল ধরলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার দলের জেলা সভাপতি, পর্যবেক্ষক, সাংসদ ও বিধায়কদের সঙ্গে কালীঘাটে নিজের বাড়ির অফিস থেকে ভিডিও কনফারেন্স করেন মমতা। সূত্রের খবর, "ওই বৈঠকে মমতা বলেছেন, দলের মধ্যে থেকে আজে-বাজে কথা বলা যাবে না। দলে থেকে যাঁরা কাজ করছে না তাঁদের প্রতি নজর রাখা হচ্ছে। দল এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।" অভিজ্ঞ মহল মনে করছে, যে ভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে লাগাতার আক্রমণাত্মক বেলাগাম মন্তব্য করে যাচ্ছে তাতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আর এর ফায়দা নিচ্ছে বিরোধী দল, বিশেষ করে গেরুয়া শিবির। তাই এদিন দলীয় বৈঠকে হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা, এমনই মনে করা হচ্ছে।
রাজ্যে ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচন। মমতার নির্দেশ, "মানুষের পাশে থেকে কাজ করুন। সামাজিক দূরত্ব মেনে সাংগঠনিক কাজ করুন। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। ফেক নিউজের ব্যাপারে নেতা ও কর্মীদের আরও সতর্ক হতে হবে। সোশাল মিডিয়াকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।" জনসংযোগের ওপর জোর দিয়েছেন দলনেত্রী। তাঁর কড়া নির্দেশ, "ত্রাণ নিয়ে কোনও রাজনীতি করা যাবে না। সব দলের কর্মীরাই যেন ত্রান পান তা দেখতে হবে। ত্রান বা রেশন নিয়ে কোনও গন্ডোগল করলে দল তার পাশে থাকবে না।" পাশাপাশি আমফান ও করোনা নিয়ে রাজ্যের সাফল্য প্রচার করতে হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন