মোদীর সভায় আমন্ত্রণ জানাতে অধিকারীদের বাড়ি শান্তিকুঞ্জে যখন মাছ-ভাতে মধ্যাহ্নভোজন সারছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়, তখনই দলবিরোধী কাজের অভিযোগে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ ১০ জেলাস্তরের নেতাকে ছেঁটে ফেলল তৃণমূল। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূলের দায়িত্বে থাকা ওই ১০ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে দলের তরফে। এদিন দুপুরে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেন, দলবিরোধী কাজের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে ওই ১০ জনকে।
তিনি এদিন বলেছেন, "আমাদের দল থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি অথচ বিজেপির হয়ে কাজ করছিলেন ওঁরা। তথ্যপ্রমাণ হাতে পেয়েই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।" একইসঙ্গে সৌমেন জানিয়েছেন, ওই নেতারা দীর্ঘদিন ধরে দলের কাজে যুক্ত ছিলেন না। নিষ্ক্রিয় ছিলেন তাঁরা। বরখাস্ত হওয়া নেতা-নেত্রীদের মধ্যে রয়েছেন শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের দুই জেলা পরিষদ সদস্য তনুশ্রী জানা ও রাখি আদক। তনুশ্রীর স্বামী দিবাকর জানা শুভেন্দুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তিনি আবার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও। তাঁকেও বরখাস্ত করা হয়েছে।
এদিকে, আগামী ২৪ মার্চ কাঁথির সভায় শিশির অধিকারীকে আমন্ত্রণ জানাতে শনিবার দুপুরে শান্তিকুঞ্জে যান লকেট। সেখানে বর্ষীয়াণ নেতার সঙ্গে আলাপচারিতা করেন। মধ্যাহ্নভোজও সারেন তাঁর বাসভবনে। অনেক দিন ধরেই তৃণমূলে বেসুরো শিশির অধিকারী। দুই ছেলে বিজেপিতে যাওয়ায় জেলা তথা শীর্ষ নেতৃত্বের বহু আক্রমণের মুখে পড়েছেন শিশিরবাবু। সেজো ছেলে দিব্যেন্দু হলদিয়ায় মোদীর অনুষ্ঠানেও হাজির ছিলেন।
মনে করা হচ্ছিলে, মোদীর ব্রিগেড সমাবেশে হাজির থেকে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ। কিন্তু তা হয়নি। তবে হাল ছাড়ছে না বিজেপিও। শিশির অধিকারীকে এবার সরাসরি সভায় থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানাল গেরুয়া শিবির। শুধু শিশির নয়, আমন্ত্রণ পেয়েছেন দিব্যেন্দুও। শিশিরবাবু বেশ কয়েকবার মুখ খুললেও দিব্যেন্দু কিন্তু জল মেপে চলেছেন। প্রকাশ্যে দল বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
তবে সূত্রের খবর, এই মাসেই দিব্যেন্দু ও শিশির অধিকারী যোগ দিতে পারেন বিজেপিতে। তিনি ও শিশিরবাবু এবার ২৪ মার্চ আদৌ মোদীর সভায় যান কি না এখন সেটাই দেখার। গেলে সেদিনই জল্পনার অবসান হবে।