দলবিরোধী মন্তব্যের জের। শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় এবং রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তবে এখনই তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করছে না দল। তাঁদের মন্তব্য নিয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোদ তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন সূত্রের খবর। ব্যক্তিগত ভাবে দুজনের সঙ্গে কথা বলবেন তৃণমূল সুপ্রিমো, এমনটাই সূত্রের খবর।
সূত্রের খবর, তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি দলনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে। কিন্তু দুজনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে এখনই নারাজ মমতা। আগে তিনি নিজে তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন, তার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। উল্লেখ্য, গত ১৪ এপ্রিল পুলিশের একটি অনুষ্ঠানে হাঁসখালি কাণ্ডের প্রেক্ষিতে মন্তব্য করেন, মহিলাদের সঙ্গে এমন অন্যায় এমন একটা রাজ্যে যেখানে মুখ্যমন্ত্রী নিজে একজন মহিলা তা সত্যি বিরাট লজ্জার। এতেই বেসুরো শোনা যায় সৌগত রায়কে।
সৌগত রায়ের মন্তব্য ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। তিনি আরও বলেন, "রাজ্যে মহিলাদের উপর নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে প্রত্যেকেই চিন্তিত। সরকারের উচিত এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নেওয়া। এটা সত্যি অত্যন্ত লজ্জাজনক যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন মহিলা তখন মহিলাদের সঙ্গে এই ধরনের অপরাধ হচ্ছে।" বিরোধীরা বলেন, তৃণমূল সাংসদ সত্যি কথাটা স্বীকার করে নিয়েছেন। অস্বস্তিতে পড়ে জোড়াফুল শিবির।
আরও পড়ুন হাঁসখালি নিয়ে বিস্ফোরক সৌগত রায়, মমতার তত্ত্ব খারিজ?
এদিকে, কুণাল ঘোষ দলের মুখপাত্র হওয়া সত্ত্বেও তিনি এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন। নাম না করেই কটাক্ষ করেন। ২০১৪ সালের নভেম্বরে সারদা কাণ্ডে জেলে থাকার সময়ই তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। সেই ঘটনায় কিছুদিন আগে আদালতে তিনি বলেন, আইকোর চিটফান্ডের সঙ্গে যুক্ত এক মন্ত্রী আমাকে পাগল বলেছিলেন। এখন তিনি দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁর জেলে থাকা উচিত।
সৌগত এবং কুণালের এহেন মন্তব্যে জোড়া অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল কংগ্রেস। শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি দুজনের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে চাইলেও দলনেত্রী নিজে তা চান না। বরং মমতা দুজনের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।