আসামের তিনসুকিয়ায় পাঁচজন বাাঙালিকে হত্যা করার প্রতিবাদে কলকাতার রাস্তায় গতকাল মিছিল করল তৃণমূল কংগ্রেস। রাতে দলের তরফে জানানো হলো, আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক এবং সাংসদদের একটি প্রতিনিধি দল তিনসুকিয়া যাচ্ছে "নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে"।
এর আগে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যাদবপুর থেকে শুরু হয়ে প্রতিবাদ মিছিল শেষ হয় হাজরায়। মিছিল এবং তার শেষে সভায় রব ওঠে, "বাঙালী হিন্দু নিধন" করছে বিজেপি। হিন্দুদের কথা বলে রাজনীতি করলেও বাঙালী হিন্দু নিধনে নেমেছে গেরুয়া শিবির, দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের। বিজেপির পাল্টা প্রশ্ন, এরাজ্যে "প্রতিদিন যাঁরা খুন হচ্ছেন, তাঁরা কি বাঙালি হিন্দু নন"? তৃণমূলের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে তদন্ত করতে হবে আসামের ঘটনার।
তৃণমূল কংগ্রেসের মিছিল থেকে দাবি ওঠে, বিজেপি বাঙালি বিরোধী। ছবি: শশী ঘোষ
এদিন হাজরার সভা থেকে অভিষেক দাবি করেন, "সিবিআই তদন্ত নয়। যথাযথ ভাবে সুপ্রিম কোর্টের মনিটরিং-এর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে হবে। আমি মনে করি, এর মধ্যে বিজেপির হাত রয়েছে। আসামের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করাা উচিত।" তাঁর বক্তব্য, "যতদিন না তদন্ত হবে, ততদিন তৃণমূলের আন্দোলন জারি থাকবে।"
বাঙালি হিন্দুকে হত্যা নিয়ে বহু হোর্ডিং চোখে পড়ে এদিনের মিছিলে। বিজেপি হিন্দুদের কথা বললেও এই হত্যাকাণ্ডে যে গেরুয়া শিবিরের হাত রয়েছে, সেই দাবি করেছে তৃণমূল। সভায় তৃণমূল যুবর সর্বভারতীয় সভাপতি শপথ করেছেন, "নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, রাজনাথ সিং, অরুন জেটলি, যাকেই বিজেপি ধরে আনুক না কেন, জামানত বাজেয়াপ্ত না হলে আমরা রাজনীতিতে থাকব না।"
শুক্রবার তৃণমূল মিছিল শুরু করে এইট বি বাস স্ট্যান্ড থেকে। ছবি: শশী ঘোষ
আসামের পাঁচ বাঙালি হত্যার পিছনে বিজেপি রয়েছে বলেই দাবি করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, "সীমান্তবর্তী এলাকায় বিষ ছড়াচ্ছে বিজেপি। আসামই তার নিদর্শন। ভাষাগত সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। এই বাংলা অত্যাচারিতদের দায়িত্ব নেবে। নাগরিক পঞ্জির আক্রোশের জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে। এই উসকানির নায়ক বিজেপি।" তাঁর দাবি, "এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।"
মিছিল শেষে হাজরা মোড়ে বক্তব্য রাখেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: শশী ঘোষ
তবে বিজেপি এই "বাঙালি হিন্দু প্রীতি" নিয়ে কটাক্ষ করেছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "রোজ বাংলায় খুন হচ্ছে। আজও গোপীবল্লভপুরে আমাদের কর্মীকে খুন করা হয়েছে। দাড়িভিটে শিক্ষকের দাবি করায় গুলি চালিয়ে ছাত্রদের খুন করা হয়েছে। ওরা কি বাঙালি হিন্দু ছিল না? তখন মনে ছিল না? তারাও উদ্বাস্তু ছিল। গরীব ছিল। এখন এত বাঙালী প্রীতি কেন?" রাজ্য নেতা সায়ন্তন বসুর দাবি, "ইসলামপুরে বাঙালি মারা গিয়েছে। সেই ঘটনার আসামী ধরা পড়েনি। আসামে এর মধ্যে অপরাধীরা ধরা পড়েছে। লোক খেপানোর রাজনীতি করছে তৃণমূল।"