নতুন ভোট ব্যাংক পরিযায়ী শ্রমিক
ক্রমশ স্পর্শকাতর হয়ে উঠছে পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যু। সামনেই হাতছানি দিচ্ছে ২০২১ বিধানসভা নির্বাচন। অন্যান্য বছর ভোটের সময়ে তাঁদের কেউ কেউ বাইরেই থেকে যেতেন, কেউ বা বাড়িতে ফিরতেন। এবার যা পরিস্থিতি তাতে এক বছরের মধ্যে ফের বাইরের রাজ্যে কাজ করতে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। এই সার সত্যটি বুঝেছেন রাজনৈতিক দলগুলি। বিশেষত দুই যুযুধান বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস। অতএব এবার নতুন ভোট ব্যাংক পরিযায়ী শ্রমিক।
পরিযায়ী শ্রমিকদের পথদুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে, ট্রেনে কাটা পড়েছেন, ট্রেন ও বাসে বাড়ি ফেরার সময়ও মারা গিয়েছেন অনেকে। ফলে ক্ষোভ জমছে। তাছাড়া লকডাউন না হলে বোঝাই যেত না এরাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষ পেটের দায়ে ভিন রাজ্যে মজদুরের কাজ করে। করোনার সময়ও রাজনীতি তাঁদের পিছন ছাড়ল না। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বা রাজ্যের তৃণমূল সরকার এখন তাদের ভোট পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 'করোনা এক্সপ্রেস' বলেছেন কেন তা নিয়ে অমিত শাহ সোমবার ভার্চুয়াল জনসভায় তোপ দেগেছেন। অর্থাৎ লক্ষ্য একটাই। সোমবার তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন অমিত শাহর জবাব দিতে অমিত মিত্র ও দীনেশ ত্রিবেদীকে নিয়ে যৌথ আক্রমণ হানেন। কিন্তু 'করোনা এক্সপ্রেস' শব্দবন্ধে মানুষের ওপর প্রভাব পড়েছে বুঝতে পেরে মঙ্গলবারই মমতা জানিয়ে দিলেন, তিনি বলেননি পাবলিক বলেছে 'করোনা এক্সপ্রেস'। আসলে ভোট বড় বালাই।
মহুয়া মৈত্রের ভিডিও বার্তা প্রসঙ্গে পঞ্চায়েতমন্ত্রী
কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের ফেসবুকে ভিডিও বার্তা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে বিতর্ক অব্যাহত। জেলা তৃণমূল নেতাদের পাশাপাশি অস্বস্তিতে রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্ব। পঞ্চায়েতের টেন্ডার প্রক্রিয়া, অর্থ থাকতেও কাজ না হওয়া প্রসঙ্গ নিয়ে পাঁচ মিনিটের ভিডিও বার্তায় তোলপাড় রাজনৈতিক মহল। দল অস্বস্তিতে পড়লেও তৃণমূল কংগ্রেসে এখনও প্রকাশ্যে বিবৃতি দেওয়া বন্ধ হচ্ছে না। আমফানের সময় রাজ্যের ক্রেতা-সুরক্ষামন্ত্রী সাধন পান্ডে আক্রমণ শানালেন আর এক মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে। ফিরহাদও পাল্টা বলেন। এরপর আসরে নামেন দলের বিধায়ক পরেশ পাল। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে কার্যত ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন সাধন পান্ডেকে। তারপর বর্ষীয়াণ নেতা পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় আমফানে সাগরে না যাওয়া নিয়ে নাম না করে রাজ্য মন্ত্রীসভার এক প্রবীণ সদস্যকে খোঁচা দিলেন। এর আগে তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায় বিজেপি দফতরে হাজির হয়েছিলেন। তখন দিলীপ ঘোষ সেই যোগাযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের নাম জড়িয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন। বিজেপির চাপ যত বাড়ছে ততই তৃণমূলে প্রকাশ্যে মুখ খোলার সংখ্যা বাড়ছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগণায় তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তর্কলহ
করোনা, আমফান যাই হোক না দক্ষিণ ২৪ পরগণায় বোমাবাজি বা গুলির লড়াই বন্ধ নেই। বন্ধ নেই গোষ্ঠী সংঘর্ষও। অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তর্কলহের জন্য়ই এই সংঘর্ষ। দক্ষিণপন্থী দলে প্রকাশ্য়ে মতান্তর বা গোষ্ঠীকলহ থাকাটাই ‘স্বাভাবিক’। তবে খোঁজ নিলে দেখা যাবে রাজ্য়ের মধ্য়ে তুলনামূলকভাবে এই জেলায় শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা একটু বেশিই হয়। কখনও তা যুব গোষ্ঠীর সঙ্গে দলের প্রধান অংশের। বাসন্তী এলাকা বছরে একাধিকবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মূলত এলাকার দখলকে কেন্দ্র করেই এই বিবাদ। বোমা বা আগ্নেয়াস্ত্র পেতেও এদের সমস্য়া নেই। এলাকা কব্জা করতে পারলেই ক্ষমতা বৃদ্ধি। ক্ষমতা মানেই নানা ফায়দা। আর্থিকভাবে সমৃদ্ধি লাভ। শীর্ষ নেতৃত্ব এই বিবাদ মেটাতে কখনও সমর্থ্য হয়নি। কেন হয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এলাকা দখলের মাঝে পড়ে সাধারণের প্রাণ যাচ্ছে নিয়মিত। এসব নিয়ে কারও কোনও হলেদোল নেই।