নাম না করে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতারির দাবি জানালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায়। শুক্রবার হেস্টিংসে দলীয় দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে এই দাবি করেছেন তিনি। এর আগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পুলিশকে ফৌজদারি মামলার পরামর্শ দিয়েছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি বলেছেন, 'সাধারণভাবে সবাই জানেন যে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মামলা করা যায় না। কিন্তু সব জেনেও এখানকার শাসক দলরে এক সাংসদ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মামলার কথা বলেছেন। সব জেনেও এই দাবি করায় সেই সাংসদকে জেলে পোড়া উচিত।'
গত ২৬ নভেম্বর রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করার দাবি জানান সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন, অপরাধীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের৷ তাই অপরাধীদের গ্রেফতার করায় তার বিরোধিতা করে ট্যুইট করছেন তিনি৷ জানান, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টাও করছেন রাজ্যপাল৷ এই কারণে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করারও দাবি জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷
তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল সাংসদ বলেছিলেন, 'ইডি যাঁদের (গোবিন্দ আগরওয়াল এবং সুদীপ্ত রায় চৌধুরী) বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য কেন বাধা দিচ্ছেন রাজ্যপাল?রাজ্যপালের সঙ্গে বিজেপি-র এবং পশ্চিমবঙ্গের অনেক ক্রিমিনালের সরাসরি যোগাযোগ আছে৷ বার বার তিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে টার্গেট করছেন৷ রাজ্যপাল মূল অভিযুক্তদের সাহায্য করার চেষ্টা করছেন৷ তদন্তে বাধা দেওয়ার এবং প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। কোনও ব্যক্তি যদি ফৌজদারি তদন্তে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন বা অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬ এবং ১৮৯ ধারায় মামলা শুরু করা যায়৷' রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই ধারাতেও মামলা করার দাবি জানিয়েছেন কল্যাণ৷
এই প্রেক্ষিতেই এ দিন তৃণমূল সাংসদকেও পাল্টা গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি।
নাড্ডার কনভয়ে হামলা নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। রেশ পৌঁছেছে দিল্লিতেও। ডিজি, মুখ্যসচিবকে তলব করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। শুক্রবার তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে উলটে জেপি নড্ডার বিরুদ্ধেই আইনভঙ্গ করার ও দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুললেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে তাঁর দাবি, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বিধানসভা ছাড়া অন্য কোথাও জবাবদিহি করতে বাধ্য নয় রাজ্য সরকার। এমনকী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকেরও মুখ্যসচিব ও ডিজিকে তলব করার এক্তিয়ার নেই বলে দাবি করেন তিনি। পুরো বিষয়টিকেই 'অসাংবিধানিক' বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জবাবে বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, 'বিনা প্ররোচনায় আমাদের উপর হামলা হয়েছে। বাংলায় আইনের শাসন নেই। গতকালের হামলায় কৈলাস বিজয়বর্গীয়র হাতের লিগামেন্ট ছিঁড়ে গিয়েছে। আমার হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বুলেটপ্রুফ গাড়িতে না গেলে জেপি নাড্ডার জীবনসংশয় হতে পারত। বাংলা সম্পূর্ণ আইনের শাসনের বাইরে। রাজ্য পুলিশ কোথাও নজর আসেনি। রাজ্যপাল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। রাজ্যপাল এক্তিয়াারে থেকেই কাজ করেছেন। যে রিপোর্ট গেছে ওটা সিস্টেম মেনেই গেছে। গতকালের ঘটনার পর বাংলায় অবিলম্বে ৩৫৬ ধারা জারি করা প্রয়োজন।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন