Advertisment

অমিত সভা আজ, ধিক্কার দিবস ঘোষণা তৃণমূলের

তড়িঘড়ি ডাকা সাংবাদিক সম্মেলনে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, NRC ইস্যুতে শনিবার কলকাতা বাদে রাজ্যের সমস্ত জেলায় ধিক্কার দিবস পালন করবে দল। ওই কর্মসূচি কলকাতায় পালিত হবে রবিবার।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

বিজেপিকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়বে না তৃণমূল কংগ্রেস। মেয়ো রোডে আজ বেলা একটা থেকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর জনসভার ২৪ ঘণ্টা আগে তৃণমূলের ধিক্কার দিবস কর্মসূচির ঘোষণা থেকে তা একেবারে পরিষ্কার। শুক্রবার তৃণমূল ভবনে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, এনআরসি ইস্যুতে আজ, শনিবার, কলকাতা বাদে রাজ্যের সমস্ত জেলায় ধিক্কার দিবস পালন করবে দল। ওই কর্মসূচি কলকাতায় পালিত হবে রবিবার।

Advertisment

গতকাল দুপুর থেকেই মেয়ো রোড এবং আশপাশের এলাকা কার্যত ব্যানারের যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। বিজেপির প্রায় প্রতিটি ব্যানারের পাশেই গজিয়ে উঠেছে তৃণমূলের ব্যানার। যাকে বলে অশান্তিপূর্ণ সহাবস্থান।

publive-image অশান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। এক্সপ্রেস ছবি: পার্থ পাল

অমিত শাহর জনসভা হওয়ার কথা ছিল ৩ অগাস্ট। পরে দিন পরিবর্তন হয়ে তা ১১ অগাস্ট চূড়ান্ত হয়। কলকাতা পুলিশের অনুমতি নিয়েও বিতর্ক দানা বাধে। শেষমেশ মেয়ো রোডে গান্ধি মূর্তির কাছে জনসভা করার সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি। এমনকী সভার মঞ্চ কোন দিকে হবে তা নিয়েও সিদ্ধান্ত বদল হয়। এবং সভায় ড্রোনের নজরদারিতে শেষ পর্যন্ত অনুমতি দিল না কলকাতা পুলিশ। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত বলে লালবাজার সূত্রে জানানো হয়েছে। সিআরপিএফও ড্রোনের নজরদারিতে অনুমতি দেয়নি বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, সভা ঘিরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রায় ৫০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে লালবাজার থেকে খবর। কাল রাত থেকেই বন্ধ রয়েছে মেয়ো রোড।


যুব মোর্চার ব্যানারে এই সভায় যথেষ্ট সংখ্যক দর্শক নিয়ে চ্যালেঞ্জ নিয়েছে রাজ্য বিজেপি। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বারে বারে ছুটে এসেছেন কলকাতায়। এরই মধ্যে এক দিনে তৃণমূল রাজ্য জুড়ে ধিক্কার কর্মসূচি ঘোষণা করায় কঠোর সমালোচনা করেছে গেরুয়া শিবির। একই দিনে যুযুধান দুই রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পুলিশ-প্রশাসনেরও।

দলের সর্বভারতীয় সভাপতির সভার দিন তৃণমূলের এই পদক্ষেপকে "প্ররোচনামূলক" আখ্যা দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির রাজ্য সাধারন সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, "প্ররোচনা সৃষ্টি করার জন্য এই কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। শনিবারের পর যে কোনওদিন তারা কর্মসূচি নিতে পারত। আমরা আমাদের কার্যকর্তাদের বলব প্ররোচনার ফাঁদে পা না দিতে। ওরা যদি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি করতে চায় তাহলে দায় ওদের। আমরা কলকাতা পুলিশকে চিঠি দিচ্ছি। পশ্চিমবঙ্গে এই ধরনের সংস্কৃতি ছিল না। তৃণমূল একটা আনসিভিলাইজ্ড পার্টি।"

আরও পড়ুন: বিজেপির হোর্ডিং বলছে, আমরা বাংলাদেশী মুসলমানদের তাড়াব, বাঙালিদের নয়

এর আগে লোকসভা ও বিধানসভায় এনআরসি নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে তৃণমূল। দলের আটজন প্রতিনিধি আসামের শিলচরে যেতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন বিমানবন্দরে। পরের দিন তাঁদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শিলচর বিমানবন্দরের থেকেই।

কাল দুপুরে তৃণমূল ভবনে তড়িঘড়ি ডাকা এক সাংবাদিক বৈঠকে দলের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "শনিবার সমস্ত জেলায় আসামের এনঅারসি থেকে লক্ষ লক্ষ বাঙালির নাম বাদ যাওয়ার প্রতিবাদে ধিক্কার দিবস পালন করবে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের শাখা সংগঠন, সাংসদ, বিধায়করা যে যেখানে আছেন, তৃণমূলের নেতা ও কর্মীরা এই প্রতিবাদে কালো পতাকা নিয়ে সামিল হবেন। প্রতিবাদ সভা হবে সর্বত্র। রবিবার কলকাতায় এই ধিক্কার দিবস পালন করা হবে। উদ্দেশ্য় প্রণোদিত ভাবে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় নাগরিকদের নাম বাদ দেওয়া যাবে না। তাঁদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।"

Mamata bjp ব্যানার যুদ্ধ থেকে বাদ যায়নি পার্ক স্ট্রিটও। এক্সপ্রেস ছবি: পার্থ পাল

পুরুলিয়ায় অমিত শাহ ও মেদিনীপুরে নরেন্দ্র মোদি সভা করার পর সেই ময়দানেই সভা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস, যেখানে কিনা এতদিন যাবৎ ২০১১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য যেখানে সভা করতেন, ওই ময়দানেই সভা করত তৃণমূল। এবার অমিত শাহর পূর্ব ঘোষিত জনসভার ২৪ ঘণ্টা আগে ধিক্কার কর্মসূচি ঘোষণা করল শাসক দল। জেলা থেকে বিজেপি নেতা-কর্মীরা আসবেন অমিত শাহর সভায়। তৃণমূলের ধিক্কার কর্মসূচিও চলবে প্রতিটি জেলায়।

প্রসঙ্গত, মেয়ো রোডে ২৮ অগাস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভায় বক্তব্য রাখবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

bjp Mamata Banerjee amit shah trinamul
Advertisment