ডিসেম্বরে এরাজ্যে বিজেপির রথযাত্রা নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আসামে বাঙালী নিধনের প্রতিবাদে হাজরা মোড়ের সভায় রথযাত্রা নিয়ে তোপ দাগলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। কিন্তু রাজ্য বিজেপি এই হুঁশিয়ারীকে আমল দিচ্ছে না। বরং দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পাল্টা হুমকি, "রথ চালানোতে বাধা দিলে বুকের ওপর রথ চালিয়ে দেব। হাওয়া বের করে দেব তৃণমূল কংগ্রেসের।"
শুক্রবার যাদবপুর এইট বি বাস স্ট্যান্ড থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেস অাসামের পাঁচজন বাঙালী হত্যার প্রতিবাদে মিছিল করে। মিছিল শেষে হাজরায় সভা করে তৃণমূল। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিষেক বলেন, "এখানে সুব্রত বক্সী রয়েছেন। তাঁর কাছে হাত জোড় করে অনুরোধ করছি, প্রয়োজনে নেত্রীর পায়ে পড়ব। আর আপনি আমাদের আটকে রাখবেন না। আপনি আমাদের আটকে রাখছেন বলে বিজেপি জোর-জবরদস্তি করার সাহস পাচ্ছে। আমি কর্মী হিসেবে নেত্রীর পায়ে গিয়ে পড়ব। আমাদের অনুমতি দিন, যেসব বাঙালীর মৃত্যু হয়েছে, তার পর যদি রাহুল সিনহা, মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষ ক্ষমা না চায়, আমরা রথের চাকা বাংলায় নড়তে দেব না। অনেক হয়েছে।"
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ সফরে ফের বিজেপিকে নিশানা মমতার
তাঁর বক্তব্যে একাধিকবার উঠে আসে বিজেপির রথযাত্রার কথা। ডিসেম্বরের ৫, ৭ ও ৯ তারিখে রাজ্যের তিন জায়গা থেকে রথ বের করবে বিজেপি। প্রথমটি তারাপীঠ, দ্বিতীয়টি কোচবিহার ও তৃতীয় রথটি যাত্রা শুরু করবে গঙ্গাসাগর থেকে। তৃণমূল কংগ্রেস মনে করছে, রথযাত্রার মাধ্যমে বিজেপি রাজ্যে অশান্তি ছড়াতে চাইছে। রথযাত্রা প্রসঙ্গে অভিষেক ফের বলেন, "আবার বলে যাচ্ছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি অনুমতি দেন, রথের 'র' থাকবে না। চাকাও থাকবে না। দড়িও থাকবে না। অনেক দেখেছি। আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আমাদের হাত বাঁধা। অনুমতি পেলে অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়েও কোনও বুথে আপনাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমাদের সৌজন্য আমাদের দুর্বলতা নয়।" ফিরহাদ হাকিম বলেন, "বাংলায় বিজেপি রথ করবে? বাংলার ছেলেরা চুড়ি পরে বসে নেই।"
তৃণমূল নেতৃত্বের হুঁশিয়ারীকে উড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। দলের সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "ভারতে রথ চালিয়েছে বিজেপি, বাংলায়ও চালাবে। বিজেপির প্রোগ্রামে বাধা দিলে দুর্গাপুরের স্টাইলে সমাধান করব।" রথের চাকা খোলা প্রসঙ্গে তাঁর হুমকি, "দেখা যাক কে কার চাকা খোলে। টিএমসির হাওয়া বের করে দেব। রথ আমরা চালাব। ওরা চেষ্টা করবে বাধা দেওয়ার। বাধা দিলে বুকের ওপর দিয়ে রথা চালাব।"
বিজেপির রাজ্য সহসভাপতি ডাঃ সুভাষ সরকার বলেন, "আমরা রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করবে। ওরা যে ভাষায় কথা বলবে, মানুষও সেই ভাষায় কথা বলবেন। তার সমস্ত দায় কিন্তু রাজ্য সরকার ও তৃণমূলের ওপর বর্তাবে। আমরা আদালতে যাব। সেই হিংসা ও অশান্তির দায় কিন্তু অভিষেক ও মমতার ওপর পড়বে।"