জাতীয় নিরাপত্তা আইনে বিজেপি নেতাকে আটক করা নিয়ে শোরগোল পড়ল ত্রিপুরায়। পশ্চিম ত্রিপুরার জিরানিয়া এলাকার বিজেপি নেতা কেশব সরকারকে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের দিনই তাঁকে পাঠানো হয়েছে বিশালগড় সেন্ট্রাল জেলে। কেশবের গ্রেফতারিতে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিতই দিচ্ছেন তাঁর পরিবার। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত ওই নেতা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে রয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে পশ্চিম ত্রিপুরার পুলিশ সুপার অজিত প্রতাপ সিং বলেন, "কেশব সরকারকে আটক করা হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা আইনে ওঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। জেলাশাসক এক নির্দেশ জারি করেছিলেন। কেশবকে বিশালগড় সেন্ট্রাল জেলে পাঠানো হয়েছে।" জাতীয় নিরাপত্তা আইনে কেশবের আটক করার ঘটনা প্রসঙ্গে পশ্চিম ত্রিপুরার জেলাশাসক সন্দীপ নামদেও মহাত্মে ব্যাখ্যা দেন, এই আইন যে শুধুমাত্র দেশ বিরোধী অপরাধের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য তা নয়, এই আইনের ক্ষেত্রটা অনেকটাই বিস্তৃত। তিনি বলেন, "আটক ব্যক্তি সম্পর্কে পুলিশের কাছ থেকে বিশদে রিপোর্ট মিলেছে। যে রিপোর্টে দেখা গিয়েছে যে, পরিকল্পিত অপরাধের সঙ্গে যোগ রয়েছে কেশব সরকারের। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে আটক করা হয়েছে।"
জাতীয় নিরাপত্তা আইনে দলের নেতাকে অভিযুক্ত করা নিয়ে বিজেপি বিধায়ক সুশান্ত চৌধুরী বলেছেন, কেশব একজন ব্যবসায়ী। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বাম বিরোধী সৈনিক। কেশব যে তাঁর খুব ঘনিষ্ঠ, সেকথাও বলেছেন সুশান্ত। তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে। মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গেও কথা হয়েছে।"
আরও পড়ুন, অলোক ভার্মাকে পদে ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়ে রাহুলের কারাবরণ
অন্যদিকে, কেশবকে আটক করার ঘটনায় রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন তাঁর পরিবার। এ প্রসঙ্গে কেশবের মা সন্ধ্যারানি সরকার অভিযোগ করেছেন, তাঁর ছেলে বিজেপিরই কয়েকজন নেতার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, "কেশব ঠিকাদার, জিরানিয়া রেল স্টেশনে সামগ্রী সরবরাহ করে। আমার মনে হয়, ওঁরাই ওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন।" এ ঘটনা প্রসঙ্গে কেশবের মা আরও বলেছেন, "ওঁরা কালো রঙের একটি বাসে করে এসেছিলেন। ৯ অক্টোবর মাঝরাতে আসেন ওঁরা। এরকম আরও দুটো গাড়ি ছিল। কেউ একজন আমার ছেলেকে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসতে বলেন এবং তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে ওকে গ্রেফতার করেন। কেন ওকে গ্রেফতার করা হল, এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করি। কিন্তু কেউই কিছু বলেননি।"
উল্লেখ্য, ছ'জন কংগ্রেস বিধায়ক-সহ কেশব বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। কেশবের মা আরও বলেন যে, সিপিএম যখন সে রাজ্য ক্ষমতায় ছিল, সেসময় তাঁর ছেলে রাজনৈতিক হিংসার শিকার হয়েছিলেন। তিনি বলেন, "ওরা (সিপিআই-এম) আমাদের বাড়ি ভাঙচুর করেছিল, ব্যবসা করার লাইসেন্স দেয়নি আমার ছেলেকে। মিথ্যা মামলায় ওকে ফাঁসানো হয়েছিল। পরে আদালত মামলা তুলে নিয়েছিল। কিন্তু দেশবিরোধী কাজের অভিযোগ কখনই আমার ছেলের বিরুদ্ধে ওঠেনি।" কেশবকে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে অভিযুক্ত করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরই এক প্রতিবেশী সত্যজিৎ রায়। তিনি বলেন, "কেশবদাকে আমরা রাজনৈতিক কর্মী হিসেবেই জানতাম।"
Read the full story in English