আরও একবার ধাক্কা খেল ত্রিপুরার বাম নেতৃত্ব। প্রবীণ সিপিআই(এম) নেতা এবং এক সময়কার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দত্ত শুক্রবার যোগ দিলেন বিজেপিতে। বিশ্বজিৎবাবুর অভিযোগ, দুর্নীতি, অপরাধমূলক কার্যকলাপ নষ্ট করে দিচ্ছে সে রাজ্যের বামপন্থী দলের পরিবেশ। শুক্রবার রাজধানী আগরতলা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে খোয়াই জেলায় এক সরকারি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ছিল। সেখানেই আনুষ্ঠানিক ভাবে বিপ্লব দেবের সরকারে যোগ দেন বিশ্বজিৎ দত্ত। বিশ্বজিৎবাবুকে স্বাগত জানানোর জন্য দলের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা বিজেপির জাতীয় স্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সুনীল দেওধর।
শনিবার সকালে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিককে বিশ্বজিৎবাবু জানিয়েছেন, তিনি "নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্রের" শিকার হয়েছিলেন। "ফেব্রুয়ারির বিধানসভা নির্বাচনের আগে তার জেরে আমায় হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। আমার বদলে দলে অন্য সদস্য আসেন," বলেছেন তিনি। চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল সিপিআই (এম) থেকে ইস্তফা দেন বিশ্বজিৎবাবু। ১৯৬৪ সাল থেকে বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ত্রিপুরা সিপিএমের মুখপত্রের বিরুদ্ধে বেনিয়মের অভিযোগ দায়ের
বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেছিল ত্রিপুরা সিপিআই (এম)। কিন্তু শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে জানুয়ারির শেষে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায়, বিশ্বজিৎ দত্তের বদলে বামপন্থী ছাত্রনেতা নির্মল বিশ্বাসের নাম ঘোষণা করা হয় দলের পক্ষ থেকে। ২,৭০০ ভোটে জয়ী হন নির্মল বিশ্বাস। প্রাক্তন বাম বিধায়কের অভিযোগ, "অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আমায় নির্বাচনে দাঁড়াতে দেওয়াই হল না। আমি অতটাও অসুস্থ ছিলাম না। সিপিআই (এম) মুখপাত্র গৌতম দাস আমায় হাসপাতালে দেখতে আসেন। পরে শুনলাম আমি নাকি নির্বাচনে লড়ার মতো সুস্থ নই। আমার জায়গায় অন্য কাউকে দাঁড় করানো হল।"
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ত্রিপুরা সিপিআই (এম) নেতা পবিত্র করের বক্তব্য, "আমরা যখন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছিলাম, তখনও বিশ্বজিৎবাবু অসুস্থই ছিলেন। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। ওঁর পক্ষে নির্বাচনে দাঁড়ানো সম্ভব ছিল না আর। বিশ্বজিৎবাবুর বিরুদ্ধে কোনও ষড়যন্ত্র করা হয়নি।"
বিজেপির ছাতার তলায় বামপন্থী আদর্শ নিয়ে মানিয়ে নেবেন কী করে, প্রশ্ন করা হলে বিশ্বজিৎবাবুর উত্তর, "মানুষের সেবা করে যাওয়াই আমার কর্তব্য। আমার বিশ্বাস, বিজেপিতে যোগ দিয়েও তা করা সম্ভব।"