ভোটের বাকি এখনও প্রায় দু'বছর। কিন্তু, ত্রিপুরার রাজনীতিতে পরতে পরতে পালাবদল। এবার ত্রিপুরায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন পিযূষ কান্তি বিশ্বাস। ইতিমধ্যেই দলনেত্রী সনিয়া গান্ধীকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তিনি। তাহলে কী পিযূষবাবুর গন্তব্যও জোড়া-ফুল? ইস্তফা ঘোষণার পর সে নিয়েও মুখ খুলেছেন এই কংগ্রেস নেতা। তবে, আচকা পিযুষ কান্তি বিশ্বাসের এই সিদ্ধান্ত সে রাজ্যের রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলেছে।
এ দিন টুইটারে পিযূষবাবু লিখেছেন, "আমাকে সহযোগিতার জন্য কংগ্রেসের সব নেতা, কর্মী ও সমর্থককে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। আমি আজ প্রদেশ সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। একই সঙ্গে রাজনীতি থেকেও অবসর নিচ্ছি। ব্যক্তিগত কারণেই এই সিদ্ধান্ত।"
কী এমন হল যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে আচমকা পদত্যাগ করলেন পিযূষ কান্তি বিশ্বাস? এমনকী রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্তও নিয়ে নিলেন? ব্যক্তিগত কারণ বললেও তা স্পষ্ট করতে চাননি এই বর্ষীয়ান নেতা। ফলে জল্পনা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে।
আরও পড়ুন- ‘বঙ্গজননী’র হাত ধরেই ফের তৃণমূলে সোমেন-জায়া শিখা মিত্র
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মতপার্থক্যের দরুন তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদ্যত কিশোর মানিক্য দেববর্মা দল ছাড়েন। পরে নিজেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন। দলের এই দুঃসময়ে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ত্রিপুরা কংগ্রেসের হাল ধরেছিলেন পিযূস কান্তি বিশ্বাস।
ত্রিপুরাতেই 'খেলা হবে'র ডাক দিয়েছে তৃণমূল। মমতা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ঘোষণা করেছেন বাংলা বিজয়ের পর এবার তৃণমূলের পাখির চোখ ত্রিপুরা। ইতিমধ্যেই উত্তর পূর্বের ওই রাজ্যে বিজেপি বিরোধী জমি পোক্ত করতে শুরু করেছে বাংলার শাসক দল। এ রাজ্যের মন্ত্রী নেতারা ত্রিপুরায় ঘাঁটি গেড়েছেন। একাধিকবার গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস বামকে পিছনে ফেলে ত্রিপুরায় প্রধান বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসাবে আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় তৃণমূল। ইতিমধ্যেই জোড়া-ফুলে যোগ দিয়েছেন সে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী প্রকাশ দাস, বিধায়ক সুবল ভৌমিক, ত্রিপুরা কংগ্রেসের কার্যনির্বাহি সভাপতি শান্তনু সাহা সহ হাত শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্বের অনেকেই। এই পথের কী পথিক হবেন সদ্য প্রাক্তন ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পিযূষ কান্তি বিশ্বাস? তিনি মুখে না বললেও রাজ্য রাজনীতিক কারবারিদের খবর সেই সম্ভাবনাই উজ্জ্বল।
এর আগে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আই-প্যাকের প্রতিনিধিদের ত্রিপুরায় আটক করেছিল পুলিশ। সেই সময় অভিযুক্তদের আইনি সহায়তা দিয়েছিলেন আইনজীবী পিযূষ কান্তি বিশ্বাস। সেই থেকেই তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের ঘনিষ্ঠতা বাড়থে থাকে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন