বিধানসভা নির্বাচন মিটতেই ত্রিপুরায় এখন ভোটপরবর্তী বিশ্লেষণ আর কাটাছেঁড়ায় ব্যস্ত রাজনৈতিক দলগুলো। আর, সেই কাটাছেঁড়াতেই বাম নেতাদের মুখে শোনা গেল পাটিগণিতের গল্প। যে পাটিগণিত শব্দটা পশ্চিমবঙ্গের বাম জমানায় হামেশাই শোনা যেত বাম নেতাদের মুখে। তাঁরা নিজেদের জয়ের কারণ হিসেবে বোঝানোর চেষ্টা করতেন যে রাজনীতিটা ঠিক পাটিগণিত নয়। সবকিছু অঙ্কের হিসেবে চলে না। মূলত এই কথা শোনা যেত বঙ্গ সিপিএমের শীর্ষ নেতাদের কথায়। এবার সেই সিপিএমেরই ত্রিপুরার বর্তমান রাজ্য সম্পাদকের মুখে শোনা গেল অন্য কথা। ত্রিপুরায় বিজেপি জিতেছে। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ত্রিপুরা সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বললেন, 'বিজেপি ভোট কমলেও পাটিগণিতের জোরে জিতেছে।'
তবে, বঙ্গ সিপিএমের পুরোনো রাজ্য সম্পাদকদের মত ভোটযুদ্ধকে এড়াননি ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। জিতেন চৌধুরী নিজেও এবার বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ীও হয়েছেন। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় বামেরা জোট করেছিল কংগ্রেসের সঙ্গে। পাশাপাশি, তাদের সঙ্গী ছিল আদিবাসী সংগঠন তিপ্রা মোথাও। তার পরও বিজেপিকে ফের ক্ষমতায় ফিরিয়েছেন ত্রিপুরাবাসী। উলটে সিপিএমের বিধায়ক সংখ্যা ১৬ থেকে কমে ১১-য় নেমে গিয়েছে। তাহলে, এতদিন যে বিজেপির প্রতি ত্রিপুরাবাসীর ক্ষোভের কথা বলছিলেন বিরোধী নেতৃত্ব, তার কী হল?
আরও পড়ুন- ইলেকটোরাল বন্ড কিনবেন? জানেন ব্যাপারটা কী? কোথায় গেলে পাবেন?
জবাবে জিতেন্দ্র চৌধুরী দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, 'বিজেপির ভোট কমেছে। কিন্তু, বিরোধীদের ভোট ভাগাভাগি রোখা যায়নি। আমরা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়েছি। কিন্তু, তিপ্রা মোথার সঙ্গে সেভাবে জোট করা যায়নি। যার ফলে ২০১৮-র তুলনায় বিজেপির ভোট কমলেও তারা জিতে গিয়েছে। সাত থেকে আটটা আসন বিরোধীদের ভোট কাটাকাটির জন্যই বিজেপি জিতেছে।' জিতেন্দ্র চৌধুরী জানান, এবারের ভোটে বাম-কংগ্রেসের ইস্যু ছিল ত্রিপুরায় গণতন্ত্র ফেরানো। আর, তিপ্রা মোথা চাইছিল, আদিবাসী স্বায়ত্তশাসন। এই সব ইস্যুকে একত্রিত করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব হয়নি। তার জেরেই হারতে হয়েছে বিরোধী জোটকে।