Advertisment

ত্রিপুরায় আক্রান্ত তৃণমূল, 'গুন্ডারাজ চলছে' কড়া তোপ অভিষেকের

রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে আগরতলা থেকে ধর্মনগরে যাওয়ার পথে আক্রান্ত হন দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহা, জয়া দত্তরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
tripura tmc leaders attack accused bjp

তৃণমূলের পাখির চোখ ত্রিপুরা।

তৃণমূলের পাখির চোখ ত্রিপুরা। রাজনৈতিক জমি তৈরি করতে আপাতত সেখানেই মাটি কামড়ে রয়েছেন যুব তৃণমূলের একাধিক শীর্ষ পদাধিকারী। এদিন রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে আগরতলা থেকে ধর্মনগরে যাচ্ছিলেন দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহা, জয়া দত্ত-সহ ত্রিপুরার তৃণমূল নেতৃত্ব। মাধঝপথে আমবাসায় এঁদের গাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। রক্তাক্ত সুদীপ, জয়া, দেবাংশুরা। তৃণমূলের তরফে অভিযোগের তির বিজেপির দিকে।

Advertisment

এই ঘটনার পরপরই টুইটে সরব হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটারে তিনি লিখেছেন, "ত্রিপুরায় বিজেপির প্রকৃত রং প্রকাশ পেল। ত্রিপুরায় তৃণমূল কর্মীদের উপর বর্বরোচিত হামলা বিপ্লব দেব সরকারের গুন্ডারাজের প্রকাশ। আপনাদের হুমকি ও আক্রামণ শুধুমাত্র অমানবিকতার প্রমাণ। যা করার করুন, তৃণমূল এক ইঞ্চি জমি ছাড়বে না।"

অভিষেক জখম দলের যুব নেতৃত্বের ছবি পোস্ট করেন। সেখানে দেখা যায় সুদীপ রাহার মাথা ফেটে গিয়েছে। জয়ারও কপাল, গাল কেটে গিয়েছে। এছাড়া তাঁদের গাড়িটিতেও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।

যুব তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রবিবারই ত্রিপুরা যাচ্ছেন কুণাল ঘোষ এবং ব্রাত্য বসু।

টুইটে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে তুলোধোনা করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি লেখেছেন, 'ত্রিপুরায় আমাদের সহকর্মীরা আক্রান্ত, রক্তাক্ত। গণতন্ত্রকে হত্যা করছে বিজেপি। তীব্র প্রতিবাদ জানাই। কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন আঙুল চুষবে?' তাঁর দাবি, "ত্রিপুরায় আসল বিপ্লব শুরু হয়েছে। বিজেপির বিদায় আসন্ন। আজকের হামলার জবাব হবে তৃণমূলের নেতৃত্বে মানুষের মহাজোটের সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে।"

যুব তৃণমূলের পদাধিকারী দেবাংশু ভট্টাচার্য। বলেন, "দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে ধর্মনগরেযাচ্ছিলাম, সেই সময় আমবাসার কাছে দুটি লরি আমাদের গাড়িটিকে আটকায়। তারপরই গাড়ি লক্ষ্য করে ইঁট, ঢিল মারা হয়। তাতেই গাড়ির পিছনের কাঁচ ভেঙে গিয়েছে। মাথা ফেটেছে সুদীপের। জয়াদিও রক্তাক্ত। আমিও কোনওমতে মাথা নীচু করে বসেছিলাম। কোনওক্রমে রক্ষা পেয়েছি। এরপরই দেখি পুলিশ ওই হামলার ঘটনাস্থল থেকে মাত্রা ১০০ গজ দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। বিজেপির দালালি করছে পুলিশ।"

যদিও এই ঘটনাকে আমল দিতে নারাজ পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, "নাটক করছে তৃণমূলে ছেলেরা। কিছুই হয়নি। ওখানে ওদের কোনও সংগঠন নেই। বুঝতে পেরে এবার নিজেরাই দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে।"

হত সপ্তাহেই আইপ্যাকের একটি দল ত্রিপুরায় গিয়েছিল। কিন্তু কোভিডবিধির কারণ দেখিয়ে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার কর্মীদের হোটেলবন্দি করা হয়। যা নিয়ে ত্রিপুরায় বিজেপি সরকারকে নিশানা করে তৃণমূল। গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধের অভিযোগ করা হয়। এরপর ত্রিপুরায় পৌঁছে যান ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক, ঋতহ্রত বন্দ্যোপাধ্যায়রা। পরে যান তৃণমূল সাংসদ ডেকের ও'ব্রায়েনও। গত সোমবার ত্রিপুরায় হাজির হয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

অভিষেকের কনভয়ে হামলার ঘটনাও ঘটে বলে অভিযোগ। নিজেই সেই ভিডিও পোস্ট করেন তিনি। প্রশ্ন তোলেন ত্রিপুরায় বিজেপি শাসিত সরকারের গণতন্ত্র নিয়ে। পরে সাফ জানিয়ে দেন, বাংলার পর তৃণমূলের লক্ষ্য ত্রিপুরা। ২০২৩ সালে তৃণমূল ত্রিপুরা দখল করবে। এরপর সে রাজ্যে জোড়া-ফুলের জমি শক্ত করতে মাঠে নেমেছেন দেবাংশু, জয়া, সুদীপরা। বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক কর্মসূচি সংগঠিত করছে তাঁরা। তার মাঝেই তৃণমূল যুব নেতৃত্বের উপর হামলার অভিযোগ উঠল গেরুয়া বাহনীর বিরুদ্ধে।

বাংলার সঙ্গেই তৃণমূল-বিজেপি ব্যাটেল ফিল্ড এখন উত্তরপূর্বের এই ছোট্ট রাজ্যটি। ২০২৩ বিধানসভাকে মাথায় রেখে ত্রিপুরায় তৃমূল আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে মরিয়া। সরব বিজেপিও। সুতরাং দুই ফুলের দ্বন্দ্বে তপ্ত ত্রিপুরাই এখন যেন দস্তুর।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tmc tripura abhishek banerjee Debangshu Bhattacharya
Advertisment