মানহানির মামলায় রাহুলের সাজা স্থগিত হওয়ার সুপ্রিম সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায়, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন ‘দেশে সংবিধান এখনও জীবিত। রাহুলের এই রায় এটি একটি উদাহরণ যে কেউ আজও আদালতে ন্যায়বিচার পেতে পারেন’।
সুপ্রিম কোর্ট ২০১৯ সালের একটি মন্তব্যের জেরে মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করার গুজরাত হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করার সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেস শিবিরের কার্যতই খুশির হাওয়া। উচ্ছ্বসিত কংগ্রেস শুক্রবার কোনরকম বিলম্ব ছাড়াই লোকসভার সাংসদ হিসাবে তাকে পুনর্বহাল করার আহ্বান জানিয়েছে এবং শীর্ষ আদালতের সিদ্ধান্তকে গণতন্ত্র এবং সংবিধানের জয় বলেও উল্লেখ করে।
আদালতের আদেশের পরপরই, লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে দেখা করেন এবং রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাঁকে অনুরোধ করেন। স্পিকার ওম বিড়লা এদিন অধির চৌধুরীকে বলেন, তার দফতর সুপ্রিম কোর্ট থেকে আদেশ পেলেই গান্ধীর সাংসদপদ ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।
সুপ্রিম এই আদেশে খুশির হাওয়া বিরোধী জোট ইন্ডিয়াতেও। AAP-এর অরবিন্দ কেজরিওয়াল, TMC সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে DMK নেতা এম কে স্টালিন এবং এসপির অখিলেশ যাদব সকলেই আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আদালতের এই রায় গণতন্ত্র এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থাকে শক্তিশালী করেছে৷ রায় প্রসঙ্গে রাহুল গান্ধী প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন তিনি জানতেন যে সত্যের জয় হবে।
এক সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, "সত্যের জয় সর্বদা হতে বাধ্য। সেটা হয় আজ না হলে কাল বা পরশু। আমার সামনের লক্ষ্য পরিষ্কার। আমার কী করা উচিত এবং আমার কাজ কী সেটা আমি জানি..."। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে, অধীর চৌধুরী, এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক কে সি ভেনুগোপাল, সিনিয়র আইনজীবী এবং কংগ্রেসের মুখপাত্র অভিষেক সিংভি এবং কংগ্রেসের নেতা জয়রাম রমেশ।
খাড়গে বলেন, গুজরাট আদালতের রায়ের পর মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করা হয়। এখন দেখা যাক সুপ্রিম নির্দেশের কত ঘণ্টার মধ্যে তাকে তার সাংসদ পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়”। সুপ্রিম কোর্ট এবং সংসদের মধ্যে দূরত্ব কিলোমিটারের কম… তাই আমি আশা করি তাকে হয়তো রাতের মধ্যেই পুনর্বহাল করা হবে…! আমরা তার (স্পিকারের) আদেশের জন্য অপেক্ষা করব।”আদালতের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে খাড়গে বলেন, “রাহুলের এই জয় দেশের প্রতিটি সাধারণ মানুষের জয়”।
রাহুলের সাংসদ পদ ফেরানর দাবি জানিয়ে স্পীকারের সঙ্গে দেখা করার পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস সাংসদ অধির চৌধুরী বলেন, “আমি স্পিকারের সঙ্গে দেখা করেছি এবং তাকে রাহুল গান্ধীর সাংসদপদ ফিরিয়ে দেওয়া অনুরোধ করেছি। যেহেতু সুপ্রিম কোর্ট তার সাজা স্থগিত করেছে। আমরা চাই গান্ধী আগামী সপ্তাহে অনাস্থা প্রস্তাবে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখুন রাহুল গান্ধী”।
স্পিকার তাঁকে এই বিষয়ে বলেন, ‘আমরা সোমবার বসে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব’। সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিরোধী দলের ভারত জোটের নেতারা। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন থেকে টিএমসি সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলেই আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “ন্যায়বিচারের জয়! এই রায় ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার এবং জয়ী হওয়ার জন্য ইণ্ডিয়া জোটের সংকল্পকে আরও শক্তিশালী করবে”।