ত্রিপুরায় ফের আক্রান্ত তৃণমূল। এবার হামলার মুখে এ রাজ্যের শাসক দলের দুই মহিলা সাংসদ। জানা গিয়েছে, দলীয় কর্মসূচি সেরে ফেরার পথে থাইরুম এলাকায় রবিবার দুই তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন ও অপরূপা পোদ্দারের গাড়িতে হামলা হয়েছে। তিনটি গাড়ি ভাঙা হয় বলে দাবি আক্রান্ত সাংসদদের। সাংসদ দোলা সেনকে হামলা থেকে বাঁচাতে গিয়ে মাথা ফেটেছে তাঁর ব্যক্তিগত সচিবের। বাঁশ, লাঠি দিয়ে সাংসদদের কনভয়ে হামলা চলে। এমনকী দূর থেকে সাইকেলেও ছোঁড়া হয় বলে দাবি করেছেন দোলা সেন। অভিযোগ, সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের ব্যাগ, নথি ছিনতাই করা হয়েছে।
আপাতত প্রাণে বাঁচতে একটি জঙ্গলের মধ্যে রয়েছেন আক্রান্ত দুই তৃণমূল সাংসদ। পুলিশি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে সাংসদ দোলা সেন বলেছেন, "বেঁচে আছি এটাই আশ্চর্যের। স্বাধীনতা দিবসে ত্রিপুরার মোদীজির আমলে কেমন স্বাধীনতা তা দেখছি। স্থানীয় নেতারা সব মার খেয়েছেন। আমি ও অপরূপা আক্রান্ত। বাংলার মানুষের মত ত্রিপুরা, গুজরাট সহ ভারতের মানুষকে বিজেপির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।" হামলাকারীদের ঠেকাতে পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল বলেও দাবি দোলা সেনের।
অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। গোটাটাই তৃণমূলের 'পাহাড় জঙ্গলে গিয়ে নাটক' বলে দাবি করেছে ত্রিপুরার গেরুয়া শিবির।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার বেলায়। স্বাধীনতা দিবসের দিন দলীয় কর্মসূচি পালনের জন্য দুই তৃণমূল সাসংসদ দোলা সেন ও অপরূপা পোদ্দার সাতগুড়ুম এলাকায় গিয়েছিলেন। এই অঞ্চল আগরতলা থেকে প্রায় ২ ঘন্টার দরত্বের। সাসংসদ দোলা সেন সংবাদ মাধ্যমে দাবি করেছেন, সেখান থেকে ফরার পথে থাইরুম এলাকায় হামলার মুখে পড়েন তাঁরা। একদল বিজেপি কর্মী, সমর্থক রাস্তা আটকায় তাঁদের কনভয়ের। এরপরই গাড়িতে হামলা চলে। বাঁশ, রড, পাথর ছোঁড়া হয়। ভেঙে গিয়েছে গাড়ির কাঁচ। সাংসদদের গাড়ি নিশানা করে সাইকেলও ছুঁড়ে মারা হয়।
এই সময়ই গাড়ি থেকে কোনওমতে বেরিয়ে পড়েন সাংসদরা। কিন্তু হামলা বন্ধ হয়নি বলে অভইযোগ। দোলা সেনকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর ব্য।ক্তিগত সচিবের মাথা ফেটে যায় বলে খবর। এরপরই প্রাণে বাঁচতে সাংসদদের কনভয়ে পাশে জঙ্গলে ঢুকে পড়ে।
পুলিশি সহায়চার দাবি করেছেন দুই তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন ও অপরূপা পোদ্দার। সূত্রের খবর, সাসংসদদের সঙ্গে ত্রিরপুরা পুলিশের ডিজির কথা হয়েছে।
এই প্রথম নয়। সপ্তাহ দু'য়েক আগেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিতে যান। সেই সময় তাঁর কনভয়ে লাঠি মেরে হামলা হয়। জায়গায় জায়গায় পথ আটকানোর চেষ্টা করে বিজেপি। তার এক সপ্তাহ পরে, খোয়াইতে তৃণমূলের তিন যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, জয়া দত্ত ও সুদীর রাহার উপর হামলা হয়। রক্তাক্ত হন সুদীপ ও জয়া। পরে অবশ্য মহামারী আইনে তাঁদেরই গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিনই খোয়াইতে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। পরে অবশ্য জামিনে মুক্ত হন দেবাংশু, সুদীপ, জয়া সহ ১৪ তৃণমূল কর্মী। পুলিশের সঙ্গে বচসার জেরে অভিষেক সহ বাকি তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে ত্রিপুরা পুলিশ।
বিজেপি শাসিত পড়শি রাজ্যে গণতন্ত্র নেই বলে সোচ্চার তৃণমূল। ২০২৩ সালে ত্রিপুরায় বদল হবে। রাজ্য দখল করবে তৃণমূল। হুঙ্কার দলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদকের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন