কি হবে শিন্দে সরকারের ভবিষ্যৎ? আজ মহারাষ্ট্রের রাজনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন, 'সর্বোচ্চ' সিদ্ধান্তের দিকে সকলের চোখ। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠী এবং মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের শিবিরের দায়ের করা বিভিন্ন পিটিশনের উপর তার রায় ঘোষণা করবে।
গত বছর, শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে উদ্ধব ঠাকরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং বিজেপির সমর্থনে সরকার গঠন করেছিলেন। রাজ্যপাল শিন্ডে সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে শপথবাক্য পাঠ করান। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছলে তা সাংবিধানিক বেঞ্চে স্থানান্তর করা হয়। বেঞ্চে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি এমআর শাহ, বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারি, বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি পিএস নরসিমা।
সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক সংকটের বিষয়ে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তার রায় ঘোষণা করবে। ২০২২ সালের মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক সঙ্কটের বিষয়ে শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে এবং একনাথ শিন্ডের শিবিরের মধ্যে চলমান দ্বন্ধে শীর্ষ আদালতের এই রায় যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। উদ্ধ্বব-শিন্ডে দ্বন্ধ গত বছরের জুন মাসে প্রকাশ্যে আসে। হঠাৎ করেই ৪০ জন বিধায়কদের নিয়ে উদয়পুরের রিসর্টে আশ্রয় নেন একনাথ শিন্ডে।
তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে সেখানে প্রতিনিধি পাঠাতেই বিদ্রোহী বিধায়কদের রাতারাতি উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় অসমের একটি রিসর্টে। গোটা প্রক্রিয়ায় একনাথ শিন্ডেকে সাহায্য করেছিল বিজেপি। এক সপ্তাহের টানাপোড়েন পর বিধায়ক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে মহা বিকাশ আগাড়ি জোটের পতন ঘটায় বিজেপি-শিন্ডে জোট। মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন উদ্ধব ঠাকরে। পরের দিনই বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে মহারাষ্ট্রে নতুন সরকার গঠন করেন একনাথ শিন্ডে। তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত করা হয়। উপমুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। তার এই সিদ্ধান্ত দল ত্যাগ বিরোধী ছিল কিনা সেই ব্যাপারে আজ অগ্নিপরীক্ষার মুখে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী।
প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে একটি পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক সঙ্কট সম্পর্কিত আবেদনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে যা উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন মহা বিকাশ আগাড়ি (এমভিএ) জোট সরকারের পতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বিচারপতি এমআর শাহ, বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারি, বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি পিএস নরসিমাও এই সাংবিধানিক বেঞ্চে রয়েছেন। সাংবিধানিক বেঞ্চ সংশ্লিষ্ট পিটিশনের শুনানি শেষ করার পর ১৬ মার্চ, তার রায় সংরক্ষণ করে। গত ২১ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয় এবং নয় দিন উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানির পর রায় সংরক্ষিত করে শীর্ষ আদালত।
মহারাষ্ট্রে গত কয়েক মাস ধরে যে রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলছে, তা শীঘ্রই শেষ হতে চলেছে। বৃহস্পতিবার (১১ মে) শিবসেনার ১৬ বিদ্রোহী বিধায়কের বরখাস্তের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট তার রায় ঘোষণা করবে। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের জুন মাসে, একনাথ শিন্ডে এবং তার দলের বিধায়করা শিবসেনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। যার জেরে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন এমভিএ সরকারের পতন ঘটে।
শিবসেনা নাম এবং প্রতীকের ব্যবহার নিয়েও শিন্ডে এবং ঠাকরে শিবিরের মধ্যে বিবাদ চরমে পৌঁছায়। নির্বাচন কমিশনের আদেশে শিবসেনা নাম এবং প্রতীকের ব্যবহারের অধিকার হারায় উদ্ধ্ব শিবির।। নানা টালবাহানায় সেই সময় চূড়ান্ত হয়নি শিন্ডে এবং শিবসেনা ত্যাগ করা বিধায়কদের কার্যকলাপ প্রসঙ্গে। উদ্ধব ঠাকরের করা মামলার রায় আজ দেবে সুপ্রিম কোর্ট। তাতে আদালত যদি জানায়, শিন্ডে এবং বাকি দলত্যাগী শিবসেনার বিধায়কদের পদক্ষেপ দলত্যাগ বিরোধী কার্যকলাপের আওতায় পড়ে, তাহেল তাঁরা পদ হারাবেন। অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীত্ব পদ নিয়ে বড়সড় সংকটের মুখে পড়তে পারেন শিন্ডে।