কাঁথিতে অমিত শাহর সভার দিন হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। মঙ্গলবার হামলার ঘটনা সামনে আসার পরই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন রাজনাথ। হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মমতাকে ফোনে রাজনাথ অবিলম্বে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন।
মঙ্গলবার অমিত শাহর জনসভার দিন উত্তেজনা ছড়ায় পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির সমাবেশে আসা প্রায় ২৫টি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে পদ্ম শিবির। এই ঘটনার জেরে কাঁথি-খড়গপুর রোড অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, কাঁথির দুরমুটে তাদের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে বিজেপি। কাঁথির বাইপাসে পেট্রোল পাম্পেও হামলা হয়েছে। এমনকি পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও খবর। ঘটনার দায় একে অপরের কাঁধে চাপিয়েছে যুযুধান তৃণমূল-বিজেপি।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, অমিত শাহর সভায় লোক দেখে ভয় পেয়ে হামলা চালিয়েছে তৃণমূল। যথেচ্ছ ভাঙচুর করেছে তারা। ঘটনাস্থলে পুলিশও আসেনি। এদিকে, তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, বাইরের জেলা থেকে সিপিএম-এর হার্মাদদের নিয়ে এসেছে বিজেপি। পার্টি অফিসের সামনে বাইকে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তারাই। "ইঁট ছুড়লে কি রসগোল্লা দেওয়া হবে?" প্রশ্ন শুভেন্দুর। এদিনের ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ কাঁথিতে ধিক্কার মিছিল করবে তৃণমূল।
আরও পড়ুন- দেশ লড়ুক মোদীকে জেতাতে, বাংলায় বিজেপি-র লক্ষ্য অন্য: অমিত শাহ
কাঁথিতে শাহর মঙ্গলবারের বক্তৃতার অনেকটা জুড়ে থেকেছে সোনার বাংলা গড়ার ডাক এবং রাজ্যের হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনার আবেগ। ‘বন্দে মাতরম’-এর রচয়িতা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় যে কাঁথির ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট (ডিএম) ছিলেন, সেই মাটিতে দাঁড়িয়ে মোদীর প্রধান সেনাপতির প্রতিশ্রুতি, বিজেপি-কে ক্ষমতায় আনলে রবীন্দ্রনাথ, চৈতন্যের বাংলাকে ফিরিয়ে আনা হবে। রাজ্যে সরস্বতী পুজো এবং দুর্গা বিসর্জনে বাধা দেওয়া হয় বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অমিত শাহ। শাসনভার বিজেপি-র হাতে গেলে অনুপ্রবেশ বন্ধ হবে এবং হিন্দু, বৌদ্ধ শরণার্থীরা ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন বলেও জানিয়েছেন শাহ। সংসদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ সংক্রান্ত নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলকে সমর্থন করবেন কী না, সে প্রশ্নও ছুড়ে দিয়েছেন পোড় খাওয়া রাজনীতিক।