Advertisment

চাকরির অন্তহীন অপেক্ষা, সরকারে আস্থা হারিয়ে উত্তরপ্রদেশের পরীক্ষার্থীদের ভরসা এখন ভগবানই

প্রচারে বিজেপি 'সংকল্প পাত্র' প্রকাশ করেছে। যেখানে উল্লেখ, বৈষম্যহীনভাবে ২০১৭ সাল থেকে উত্তরপ্রদেশে সরকারি চাকরিতে ৫ লক্ষ নিয়োগ হয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
uttarpradesh poll 2022 Prayagraj coaching hub years spent in wait for job

একের পর এক পরীক্ষা হচ্ছে। কিন্তু প্রয়াগরাজে পরীক্ষার্থীদের অপেক্ষার অবসান হচ্ছে না।

হিন্দি বলয়ের উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে 'হিন্দুত্ব' বিজেপির অন্যতম ইস্যু। তবে, গেরুয়া শিবিরের প্রচারে মাঝে মধ্যেই উঁকি মারছে কর্মসংস্থান, বেকারত্বের বিষয়গুলিও। প্রধানমন্ত্রী মোদী থেকে মুখ্যমন্ত্রী যোগী- গত পাঁচ বছরে উত্তরপ্রদেশে কয়েক লাখ নিয়োগের দাবি করছেন। কিন্তু, প্রকৃত অবস্থা কী? কী অবস্থা সেই রাজ্যের সরকারি চাকরিতে নিয়োগের? তা জানতে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিনিধি ঢু মেরেছিল সরকারি চাকরির প্রস্তুতির জন্য অন্যতম কোচিং হাব প্রয়াগরাজে।

Advertisment

প্রয়াগরাজের নৈনি, ধুনসি, ফাফামাউ অঞ্চলে ব্যাঙের ছাতার মতো কোচিং সেন্টার গড়ে উঠেছে। সরকারি চাকরির প্রস্তুতি এইসব কোচিংগুলিতে দেওয়া হয়। দিল্লি বা অন্যান্য জায়গার থেকে এইসব কোচিং সেন্টারে সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির খরচ অপেক্ষাকৃত অনেকটাই কম। ফলে উত্তরপ্রদেশ তো বটেই, পার্শ্ববর্তী বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকেও প্রয়াগ রাজ্যে বহু পড়ুিয়ার সমাগম ঘটে সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য।

এইরকমই এক পড়ুয়া রাই। গত পাঁচ বছর ধরে প্রয়াগরাজের এক কোচিং সেন্টারে সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পিএসসি-র মেইন পরীক্ষা টপকেছেন তিনবার। তাঁর মতে, 'আমি শুধু আইপিএস-র জন্যই পরীক্ষায় বসেছি। আমার বয়স ২৯, আমি আশাবাদী চাকরি একদিন পাবই। ৪০ বছর পর্যন্ত পরীক্ষা দেওয়া যায়। অর্থাৎ হাতে এখনও ১১ বছর আছে।'

রাইয়ের মতো সরকারি চাকরির আশা করে প্রায় ৫ লক্ষ পড়ুয়া বর্তমানে এখানে রয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় ২ লক্ষ প্রয়াগরাজের কোচিং সেন্টারগুলিতে পড়ছেন। চাহিদা বেশি আইএস, আইপিএস ও পিএসসি-র। তারপরই তালিকায় রয়েছে অপেক্ষাকত কম গ্রেডের সরকারি চাকরি, কনস্টেবল পদ।

প্রচারে বিজেপি 'সংকল্প পাত্র' প্রকাশ করেছে। যেখানে উল্লেখ, বৈষম্যহীনভাবে ২০১৭ সাল থেকে উত্তরপ্রদেশে সরকারি চাকরিতে ৫ লক্ষ নিয়োগ হয়েছে। এছাড়া চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সংখ্যা ৩ লাখ। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে যে, যত দ্রুত সম্ভব রাজ্য সরকারি চাকরিতে শূন্যপদ পূরণ করা হবে।

তবে পড়ুয়াদের মতে, এসব দাবি প্রচারে হয়ে থাকে, কিন্তু বাস্তবটা আলাদা। অবিনাশ পাণ্ডের কথা শুনলেই যার প্রমাণ মেলে। অবিনাশের কথায়, ১৯৯৮ সাল থেকে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারি পরীক্ষা দিয়ে চলেছেন তিনি। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ২বার ও পিএসসি ৪বার পেরিয়েছে সে। এখন অবিনাশের বয়স ৪০। বর্তমানে সে প্রয়াগরাজের এক কোচিং সেন্টারের শিক্ষক। এখনও সে শেষবারের মত একবার সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বসতে মরিয়া। অবিনাশ বলছিলেন, 'পরীক্ষায় বসলেও তার ফলাফল করে প্রকাশিত হবে তা কেউ জানে না।'

অনেক পড়ুয়াদের দাবি, আসলে পরীক্ষার ফর্ম বিক্রি করে কোষাগার ভরায় সরকার। পুষ্পেন্দ্র প্রতাপ সিং নামে এক পড়ুয়ার দাবি, 'ইউপিএসসি পরীক্ষার ফর্মেরদাম ১০০ টাকা। সিভিস সার্ভিসের মেইনের খরচ ২০০ টাকা। পিএসসির ফর্মের দাম ১২৫ টাকা, বিএড প্রবেশিকার ১৫০০ টাকা, টেটের জন্য ১২০০ টাকা। প্রতিবারই কয়েক লক্ষ লোক পরীক্ষা দিয়ে থাকেন অঙ্ক করে দেখুন কত অর্থ ফর্মবিক্রি থেকে তুলে নেয় সরকার।'

২০২১য়ের ২০ ডিসেম্বর লোকসভার তথ্য অনুসারে, উত্তরপ্রদেশে শুধু জুনিয়ার বেসিক স্কুল (প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি) ও সিনিয়ার বেসিক স্কুল (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি) মিলিয়ে এখনও মোট ১.২৬ লাখ পদ শূন্য রয়েছে।

Read in English

uttar pradesh Government Jobs Uttarakhand Poll 2022
Advertisment