উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখরের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক, সংসদীয় কমিটিতে ‘ব্যক্তিগত পছন্দের’ কর্মী নিয়োগের অভিযোগ। বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখর ২০টি সংসদীয় কমিটিতে তার মনোনীত ১২ জন কর্মীকে নিয়োগ করেছেন।
রাজ্যসভা সচিবালয়ের জারি করা আদেশ অনুসারে, ব্যক্তিগত সহায়কদের মধ্য থেকে আটজনকে ২০ টি কমিটিতে নিয়োগ করেছেন উপরাষ্ট্রপতি, যার মধ্যে উপ-রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ে চার কর্মীকেও নিয়োগ করা হয়েছে। রাজ্যসভার সচিবালয়ের সূত্র বলেছে যে কমিটিতে স্পিকারের পছন্দসই কর্মী নিয়োগের এমন কোন নজির আগে নেই। কমিটিতে নিযুক্ত ব্যক্তিগত সহায়কদের মধ্যে রয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্টের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি), রাষ্ট্রপতির ওএসডি এবং ভাইস প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত সচিব।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখর মঙ্গলবার আটজন সদস্যকে ২০টি কমিটিতে নিয়োগ করেছেন, বিরোধীদলগুলি এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধীতা করে একে ‘অদ্ভুত’ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন।রাজ্যসভা সচিবালয়ের জারি করা আদেশ অনুসারে, ধনখরের ব্যক্তিগত কর্মীদের মধ্য থেকে আটজনকে ২০ টি কমিটিতে নিয়োগ করা হয়েছে, যার মধ্যে সহ-রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ে চারজন কর্মচারী নিয়োগ করা হয়েছে। বিরোধীরা বলেছে ধনখরের এমন পদক্ষেপ কার্যতই নজিরবিহীন।
বিরোধী নেতারা বলেছেন যে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তার ব্যক্তিগত কর্মীদের নিয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন কমিটির উপর নজর রাখার চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে রাজ্যসভার কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। টিএমসি বলেছে যে ২০১৪ সালে বিলগুলি যাচাইয়ের হার ছিল ৬৭ শতাংশ। এখন তা ১৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
সাংসদদের নিয়ে গঠিত এই কমিটিগুলিতে সহায়তাকারী সদস্য হিসাবে রাখা হয় জুনিয়র অফিসারদের। কমিটির কার্যবিবরণী নথিভুক্ত করা এবং সমন্বয় রক্ষাই তাঁদের মূল দায়িত্ব। কমিটির আলোচ্য বিষয়ে গোপনীয়তা রক্ষাও তাঁদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। সূত্রের খবর, ২০টি হাউস কমিটির মধ্যে ৮টিতে নিজের ব্যক্তিগত সহায়কদের নিয়োগের ব্যবস্থা করছেন ধনখড়। বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপালের আচরণ এ ক্ষেত্রে বেআইনি না হলেও সংসদীয় রীতিনীতি এবং ঐতিহ্যের পরিপন্থী বলেই দাবি করেছে বিরোধীশিবির।
সংসদীয় কমিটিতে ধনখর কর্তৃক নিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) রাজেশ এন নায়েক, ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) সুজিত কুমার, অতিরিক্ত ব্যক্তিগত সচিব সঞ্জয় ভার্মা এবং ওএসডি অভূদয় সিং শেখাওয়াত। তাঁর ওএসডিরা হলেন অখিল চৌধুরী, দীনেশ ডি, কৌস্তুভ সুধাকর ভালেকার এবং পিএস অদিতি চৌধুরী। কংগ্রেসের সাংসদ মনীশ তিওয়ারি এই সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে এক ট্যুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘কীভাবে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে স্বতন্ত্র কর্মী নিয়োগ করতে পারেন তিনি’? টিএমসি দাবি করেছে ধনখরের পূর্বসূরি ভেঙ্কাইয়া নাইডুর আমলে গত পাঁচ বছরে সংসদীয় আইনের ২৬৭ নম্বর ধারা অনুসারে কোন আলোচনা হয়নি। এই বিষয়ে বিবৃতি জারি করে টিএমসি।
লোকসভার প্রাক্তন আধিকারিক পিডিটি আচার্য দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন যে এমন কোন নিয়ম নেই যার অধীনে স্পিকার কমিটিগুলোকে সাহায্য করার জন্য ব্যক্তিগত সহায়কদের নিয়োগ করতে পারেন। এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোন নিয়োগ হয়নি। মোট ২৪ টি স্থায়ী কমিটি রয়েছে, প্রতিটিতে ২১ জন লোকসভা সাংসদ এবং ১০ জন রাজ্যসভার সাংসদ রয়েছে। ২৪টির মধ্যে ১৬টি লোকসভার স্পিকারের অধীনে কাজ করে এবং আটটি রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের এখতিয়ারে রয়েছে।