ভোটের বাজারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে নিয়ে জোর দড়ি টানাটানি শুরু হয়ে গেল রাজ্য রাজনীতিতে। বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের মূর্তি গড়বে রাজ্য সরকার। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুধু মাত্র যে মূর্তি গড়বে মমতা সরকার তাই নয়, বিদ্যাসাগরের মিউজিয়াম তৈরি করা হবে। পাশাপাশি বিদ্যাসাগর কলেজকে হেরিটেজ হিসেবে গড়া হবে। একথা ঘোষণা করলেন শিক্ষামন্ত্রী। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘ক্ষমতায় এলে ওই জায়গায় পঞ্চধাতুর বিদ্যাসাগরের মূর্তি গড়বে কেন্দ্রীয় সরকার’’। মোদীর বিদ্যাসাগরের মূর্তির প্রতিশ্রুতিকে নিশানা করে মমতা পাল্টা বলেন, মোদীর বিদ্যাসাগরের মূর্তি নেওয়া হবে না। বাংলাই গড়বে বিদ্যাসাগরের মূর্তি।
ঠিক কী বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ?
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগরের মূর্তি নতুন করে রাজ্য সরকারের টাকায় গড়া হবে। শিক্ষা দফতরের তত্ত্বাবধানে গড়া হবে। বিদ্যাসাগরের মূল্যবান জিনিস, বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে মিউজিয়াম তৈরি করা হবে। বিদ্যাসাগর কলেজকে হেরিটেজ হিসেবে গড়ে তোলা হবে’’। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিদ্যাসাগরের দ্বি-শত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক সপ্তাহ ব্যাপী রাজ্য সরকারের সব স্কুলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করার কথাও এদিন জানান শিক্ষামন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ‘মূর্তি ভেঙেছি প্রমাণ করতে না পারলে জেলে টানব’, মোদীকে হুঁশিয়ারি মমতার
অন্যদিকে, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনায় বিজেপিকে নিশানা করে পার্থ বলেন, ‘‘যারা ভাঙল, লজ্জায় ঢাকতে পারছে না। ক্লিপিংসে যাদের দেখা যাচ্ছে, তাদের গায়ে গেরুয়া উত্তরীয় জড়ানো। এটা জাতীর লজ্জা, বাংলার অসম্মান। এই জঘন্য, বর্বরোচিত কাজ যারা করেছে, তাদের যেন কেউ কোনওদিন ক্ষমা না করেন’’।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার কলকাতায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর রোড শো ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে কলেজ স্ট্রিট চত্বরে। বিদ্যাসাগর কলেজে তাণ্ডব চালানো হয়। বিদ্যাসাগর কলেজের একটি ঘরে থাকা বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙচুর করা হয়। বিজেপির বিরুদ্ধেই বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। অন্যদিকে, এ ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছে বিজেপি। এদিকে, বিদ্যাসাগরের মূর্তি গড়া নিয়ে মোদীর প্রতিশ্রুতি শোনার পরই গতকাল মমতা বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশ থেকে বলছে, মূর্তি বানিয়ে দেবে। তোমারটা থোড়াই নেব আমরা। বাংলায় টাকা আছে বিদ্যাসাগরের মূর্তি বানানোর জন্য। তোমার কাছে বাংলা ভিক্ষা চায় না। ২০০ বছরের ঐতিহ্য ভেঙেছেন। ফেরাতে পারবেন? কান ধরে ওঠবোস করা উচিত। একবার নয়, লক্ষবার করা উচিত। মিথ্যা কথা বলার জন্য। প্রমাণ করুণ, যে আমরা মূর্তি ভেঙেছি, তা না হলে জেলে টানব আপনাকে। আমরা ছেড়ে কথা বলব না। আমাদের প্রমাণ রয়েছে। আইন আইনের পথে চলবে’’।