বিজেপি নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তর ওপর হামলার ঘটনায় শুক্রবার একটি তিন-সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্বভারতী। গত ৮ জানুয়ারি বিশ্বভারতী প্রাঙ্গণে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) সংক্রান্ত একটি আলোচনাসভায় যোগ দিতে যান স্বপনবাবু। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ প্রদর্শন করে তাঁকে একটি ঘরে বন্দী রাখা হয় বেশ কয়েক ঘণ্টা। এই ঘটনা ছাড়াও ১৫ জানুয়ারি ক্যাম্পাসের ভেতরে দুই ছাত্রগোষ্ঠীর মধ্যে তথাকথিত সংঘর্ষেরও তদন্ত করবে ওই কমিটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, "গত ৮ জানুয়ারি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সংক্রান্ত একটি সভায় ভাষণ দিতে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঘরে বন্দী করে রাখা হয় বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্তকে, যে ঘরের বাইরে ছিল উত্তেজিত জনতা। আমরা এই ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য একটি তিন-সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি, যেটি একমাসের মধ্যে উপাচার্যের কাছে রিপোর্ট জমা দেবে। এছাড়াও ১৫ জানুয়ারির তথাকথিত ছাত্র সংঘর্ষেরও তদন্ত করবে।"
কমিটির তিন সদস্য হলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য, এবং বিশ্বভারতীর এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের দুই সদস্য দুলালচন্দ্র ঘোষ এবং মঞ্জুমোহন মুখোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: সিএএ-এর সমর্থনে বক্তৃতা, বিশ্বভারতীতে আটক বিজেপি সাংসদ
কমিটি গঠিত হওয়ার কয়েকঘন্টার মধ্যেই বাম সমর্থক ছাত্র সংগঠনের কিছু সদস্য প্রতিবাদ মিছিল করে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় দফতরের সামনে। তাঁদের দাবি ছিল, প্রথমে ছাত্রদের ওপর হামলার তদন্ত করা হোক।
আন্দোলনকারী এক পড়ুয়ার কথায়, "স্বপন দাশগুপ্তকে বন্দী করে রাখার ব্যাপারে তদন্তের কোনও প্রয়োজন নেই। যে ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ, তাদের ওপর কারা হামলা করল, তার তদন্ত করতে আগে প্যানেল গড়ুক ইউনিভার্সিটি। স্বপন দাশগুপ্ত এমপি হতে পারেন, কিন্তু উনি বহিরাগত। একজন বিজেপি সাংসদকে নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন উপাচার্যের?"
গত বুধবার বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর বিশ্বভারতী শাখার দুই সদস্যকে লাঠি দিয়ে মারধর করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় দুই ব্যক্তিকে। তার পরে পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তদন্ত কমিটি গঠনের।
আরও পড়ুন: জেএনইউ-এর পর বিশ্বভারতী! রাতের অন্ধকারে ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ুয়াদের মারধর, অভিযুক্ত সেই এবিভিপি
গ্রেফতার হওয়া দুই ব্যক্তিকে অচিন্ত্য বাগদী এবং শাব্বির আলি বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এফআইআর-এ উল্লিখিত তৃতীয় ব্যক্তি সুলভ কর্মকারের খোঁজ করছে পুলিশ।
আহত দুই এসএফআই সদস্য স্বপ্ননীল মুখোপাধ্যায় এবং ফাল্গুনী খাঁ অভিযোগ করেছেন, তাঁদের ওপর হামলা চালান রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি'র) সদস্যরা। তবে তারা এই ঘটনায় কোনোভাবে জড়িত ছিল না বলে জানিয়েছে এবিভিপি।
দুই আহত ছাত্রের দাবি, ৮ জানুয়ারি বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোয় তাঁদের ওপর হামলা চালান "এবিভিপি'র সদস্যরা"। কিন্তু এবিভিপি জানিয়েছে, অচিন্ত্য বাগদী এবং শাব্বির আলির সঙ্গে তাদের কোনোরকম যোগ নেই।