বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দিনের সফরে ৫ সেপ্টেম্বর ভারতে আসছেন। ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বরের এই চারদিনের সফরে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
ভারত সফরের আগে এক সাক্ষাৎকারে হাসিনা বলেন, ‘রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা। তিনি বলেন, যে তিনি আশা করেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বিষয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করবেন। সোমবার থেকে চার দিনের সফরে ভারতে আসছেন শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। তার ভারত সফরের আগে, তিনি একটি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তিনি তুলে ধরেন। তিন বছর পর শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে সাজোসাজো রব পড়েছে দিল্লি ও ঢাকায়। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, হাসিনা চার দিনের সফরে ৫ সেপ্টেম্বর ভারতে যাচ্ছেন। তিস্তা সহ অন্যান্য নদীর জলবণ্টন, ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো, সীমান্ত সুরক্ষা, জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহের মতো বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে এই সফরে।
আমরা 'রোহিঙ্গাদের' আশ্রয় দিচ্ছি: শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের নিয়ে কথা প্রসঙ্গে বলেন, 'এটা আমাদের জন্য বড় বোঝা'। আমরা আন্তর্জাতিক স্তরে এবং আমাদের প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করছি। যাতে রোহিঙ্গারা দেশে ফিরে যেতে পারে। আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছি, হাসিনা বলেন, কোভিডের সময় আমাদেরও ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশ্ন হল তারা কতদিন এখানে থাকবেন। কেউ কেউ মাদক চোরাচালানে, নারী পাচারের সঙ্গে জড়িত। তারা যত তাড়াতাড়ি তাদের বাড়িতে ফিরে যাবে, আমাদের দেশের জন্য এবং মায়ানমারের জন্য ততই মঙ্গল।
জল বণ্টনে ভারতকে উদারতা দেখাতে হবে: শেখ হাসিনা
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে। মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা নিয়ে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিই। আমার দলের লোকজন এ ব্যাপারে অনেক সচেতন। একইসঙ্গে ভারত-বাংলাদেশ জলবণ্টন নিয়ে বিরোধ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জলবন্টন ইস্যুতে আমরা ভারতের ওপর অনেকাংশেই নির্ভর শীল। তাই ভারতের উচিত আরও উদারতা দেখানো। এতে উভয় দেশেরই লাভ । বিশেষ করে তিস্তা জলবন্টন সমস্যার কারণে অনেক সময় আমাদের দেশের জনগণ অনেক কষ্ট ভোগ করে। তিনি বলেন, 'আমি মনে করি বিষয়টির সমাধান হওয়া উচিত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই সমস্যার সমাধান করতে আগ্রহী, এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। এর সমাধান হওয়া উচিত"।
আরও পড়ুন: <
শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি আমাদের দেশে আসবে না: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তার দেশের অর্থনীতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, "আমাদের অর্থনীতি এখনও অনেক বেশি শক্তিশালী। আমরা করোনা মহামারীর মোকাবিলা করেছি, ইউক্রেন ও রাশিয়া যুদ্ধও আমাদের প্রভাবিত করেছে কিন্তু বাংলাদেশ সময়মত ঋণ পরিশোধ করছে। আমি মনে করি না আমরা কখনো শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হব"।
ইউক্রেন থেকে বাংলাদেশি ছাত্র উদ্ধারে ভারতের অবদান ভোলার নয় : হাসিনা
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, "রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের সময় আমাদের অনেক পড়ুয়া ইউক্রেনে আটকে পড়েছিল। ভারত সেখান থেকে ছাত্রদের উদ্ধার করে, এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তিনি বলেন, ভারত শুধু বাংলাদেশকেই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোকেও ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছে। যা মহামারি মোকাবিলায় বিশেষ ভাবে সাহায্য করেছে"।
আমি চিন-ভারতের মধ্যে ঢুকতে চাই না, বাংলাদেশের উন্নয়ন চাই: হাসিনা
বিদেশনীতি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমাদের বিদেশনীতি খুবই পরিষ্কার। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়, চীন-ভারতের মধ্যে কোনো সমস্যা থাকলে আমি তাতে ঢুকতে চাই না। দেশের উন্নয়ন চাই'।
'ভারত আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধু': হাসিনা
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী। আমাদের মধ্যে খুবই ভাল সম্পর্ক আছে। কিছু সমস্যা আছে, কিন্তু আমরা সেগুলির বেশিরভাগই সমাধান করেছি। আমি মনে করি আমাদের আরও কিছু সমস্যা সমাধানে একত্রে কাজ করা উচিৎ। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে কোনো সমস্যা থাকলে তা দ্বিপাক্ষিক ভাবে সমাধান করা যেতে পারে। তিনি বলেন, ভারত আমাদের নির্ভরযোগ্য অংশীদার। ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারতের অবদান আমরা সবসময় মনে রাখি। ১৯৪৫ সালে যখন আমি আমার পরিবারের সবাইকে সদস্যকে হারায়। তখন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আমাদের ভারতে আশ্রয় দেন।
প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বকে গুরুত্ব দিন, বলেন শেখ হাসিনা
ভারত ও বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী দেশ। আমি সবসময় আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়ে থাকি কারণ আমি মনে করি এই বন্ধুত্ব আমাদের দেশের মানুষের জন্য। দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য কিভাবে আরও উন্নত করা যায় সেটাই আমাদের অগ্রাধিকার।