Jagdeep Dhankhar: এক ঘণ্টা থাকার কথা ছিল, ছিলেন মাত্র ১০ মিনিট। শুক্রবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় বিধানসভা অধিবেশনের প্রারম্ভিক ভাষণ দিয়েছেন মাত্র ৪ মিনিট ১২ সেকেন্ড। প্রথম ও শেষের সামান্য অংশ পড়ে বাজেট ভাষণ সমাপ্ত করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন। রাজ্যপালের ভাষণের সময় বিজেপি বিধায়করা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এদিন রাজ্যপালের লিখিত ভাষণ ইংরেজিতে ছিল ১৮ পাতা ও বাংলায় ১৪ পাতার। ভাষণে উল্লেখ ছিল ভোট পরবর্তী হিংসা কখন হয়েছে, কে তখন দায়িত্বে ছিল, ফেক ভিডিও প্রচারের বিরোধিতার। এছাড়া রাজ্যভাগের প্রচেষ্টার কড়া নিন্দা করা হয়েছে রাজ্যপালের লিখিত ভাষণে।
নির্বাচন পরবর্তী হিংসার অভিযোগ জানাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রন্ত্রী অমিত শাহর কাছে ছুটে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপির দাবি, এই হিংসায় তাঁদের ৪১ জন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। হাজার হাজার কর্মী অত্যাচারের ফলে ঘরছাড়া। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের কাছে ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়েও দরবার করেছে বিজেপি। হিংসা নিয়ে সরব হয়েছিলেন রাজ্যপাল স্বয়ং। টুইটে ছবি, ভিডিও প্রকাশ করে প্রতিবাদ করেছেন তিনি।
এদিন রাজ্যপালের লিখিত ভাষণে বলা হয়েছে, "বহুল চর্চিত ভোট পরবর্তী হিংসার সবকটি ঘটনাই নির্বাচনী কালপর্বে সংঘটিত হয়। যখন রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে ভারতের নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণ, পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানে ছিল। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর এ ব্যাপারে অবিলম্বে দ্রুততার সঙ্গে ও সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং অতি শীঘ্র স্বাভাবিকতা ফিরে আসে।"
আরও পড়ুন বেনজির, চার মিনিটেই ভাষণ শেষ রাজ্যপালের, কী বললেন শুভেন্দু?
সম্প্রতি বিজেপির দুই সাংসদ আলিপুরদুয়ারের জন বার্লা ও বিষ্ণুপুরের সৌমিত্র খাঁ রাজ্য ভাগের দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন। বঞ্চনা ও অবহেলার কথা বলে একদিকে উত্তরবঙ্গ ও অন্যদিকে জঙ্গলমহল-রাঢ়বঙ্গ পৃথক রাজ্যের দাবি তোলেন ওই দুই সাংসদ। এদিন রাজ্যপালের লিখিত ভাষণে রয়েছে, "অশুভ শক্তি তাদের নিজেদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থে রাজ্যের বিভাজনের কথা বলছে। বস্তুত, এদের অভিসন্ধি হল তাদের নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য রাজ্যে সুনাম নষ্ট করা। নিজেদের স্বার্থে বাংলা বিভাজনের প্রচেষ্টা ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমার সরকার তীব্র নিন্দা জানায়। আমরা কোনও মূল্যেই রাজ্যকে ও রাজ্যের মানুষকে বিভক্ত করতে দেব না। আমাদের লক্ষ্য হল রাজ্য ও রাজ্যের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা, বিভাজন ঘটানো নয়।"
আরও পড়ুন বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গেই বসলেন তৃণমূল নেতা মুকুল রায়
রাজ্য প্রশাসন একাধিকবার জানিয়ে এসেছে ফেক ভিডিও ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এবিষয়টাও উল্লেখ রয়েছে ধনকড়ের ভাষণে। এবিষয়ে বলা হয়েছে, "ইতিমধ্যে রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট এক বিশেষ শ্রেণির মানুষ তাদের নিজেদের কায়েমি স্বার্থ অক্ষুন্ন রাখতে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের উদ্দেশ্যে তাদের নিজস্ব সামাজিক মাধ্যম নেটওয়ার্কগুলিতে ভূয়ো খবর, জাল ভিডিও, অর্ধসত্য ঘটনার বিকৃত বয়ান এমনকি সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে চলেছে। জাল ভিডিও পোস্ট ও খবরের বিরুদ্ধে আমার সরকার কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ৯৩টি এ জাতীয় মামলা নিবন্ধীকৃত হয়েছে ও ৪৭৭টি পোস্ট বন্ধ করা বা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন