রাজ্যপাল বনাম তৃণমূল সংঘাতের পারদ ক্রমশ চড়ছে। রোজই এই সংঘাত পর্ব নয়া মোড় নিচ্ছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর বিধানসভায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের পরিদর্শন ঘিরেও সরগরম হয়ে রইল বঙ্গ রাজনীতি। এবার রাজ্যপালকে নিশানা করতে গিয়ে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘তিনি (রাজ্যপাল) ঘুরুন। কেউ বারণ করছেন না! কিন্তু সরকারের পয়সা নষ্ট করবেন না’’।
রাজ্যপালকে বিঁধে ঠিক কী বলেছেন পার্থ?
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল মহাসচিব বলেন, ‘‘কাল (বুধবার) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন। আজ বিধানসভাতেও চলে গেলেন। যদি সরকারের কোনও ভুল হয়ে থাকে, তাহলে প্রশ্ন না তুলে উনি সরকারকে বলতে পারেন...সব জায়গায় যাচ্ছেন, ঘুরছেন, ছবি তুলছেন...ওঁর চিড়িয়াখানা দেখা উচিত। কে বারণ করেছেন? উনি ঘুরুন। কিন্তু সরকারের পয়সা নষ্ট করবেন না’’। এদিন রাজভবনের খরচের প্রসঙ্গ তুলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজভবনের খরচ বেড়ে গিয়েছে’’। রাজ্যপালের এদিনের বিধানসভা পরিদর্শনের পর ইনফোকম ২০১৯-এর মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এদিন ফের বলতে শোনা যায়, ‘‘আমাদের এখানেও সমান্তরাল সরকার চালানোর চেষ্টা চলছে’’।
আরও পড়ুন: মুকুলের পথ আটকালো পুলিশ, খিদিরপুরে উত্তেজনা
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে বিধানসভায় যান জগদীপ ধনকড়। রাজ্যপালের জন্য নির্দিষ্ট তিন নম্বর গেট ‘বন্ধ’ থাকায়, অন্য গেট দিয়েই বৃহস্পতিবার বিধানসভায় যান জগদীপ ধনকড়। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল বিধানসভার বাইরে উপস্থিত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “অধিবেশন স্থগিত মানে বিধানসভা বন্ধ নয়। স্পিকার বলেছিলেন আমাকে স্বাগত জানাবেন। সেটা জানতে পেরেই আমি সম্মতি জানিয়েছিলাম চিঠি দিয়ে। কী এমন ঘটল যে স্পিকার অনুপস্থিত থাকলেন? অপমানিত বোধ করছি। গণতন্ত্র এভাবে চলতে পারে না।”
আরও পড়ুন: বাংলায় বিজেপির মনোবল তলানিতে? মুকুল-পুত্র-সব্যসাচীর সাংবাদিক বৈঠক ঘিরে প্রশ্ন
এর আগে, সেনেট বৈঠক বাতিল হওয়া সত্ত্বেও বুধবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে যান জগদীপ ধনকড়। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য-সহ বিভিন্ন আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন না। এমনকী, উপাচার্যের ঘর তালাবন্ধ ছিল। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর ফিরে যান আচার্য তথা রাজ্যপাল। এ ঘটনা ঘিরে রাজ্যপাল বনাম তৃণমূল সরকার সংঘাত নয়া মাত্রা নেয়।
ক’দিন আগে ‘রাজ্যপাল বিলে সই করছেন না বলেই’ কার্যত নজিরবিহীন ভাবে বিধানসভার অধিবেশন ২ দিনের জন্য স্থগিত করার কথা ঘোষণা করে দেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও বিল সই না করার অভিযোগ খণ্ডন করে রাজভবন। এ প্রেক্ষিতে বুধবার সকালে টুইটে রাজ্যপাল লেখেন, ‘‘অন্ধের মতো কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। রাজ্যপাল হওয়ার দরুণ সংবিধান মেনে চলতে হবে। আমি রবার স্ট্যাম্প বা পোস্ট অফিস নই। বিলগুলি সংবিধান সম্মত কিনা তা দেরি না করেই খতিয়ে দেখেছি’’।