শীতলকুচি হত্যাকাণ্ডে আপত্তিকর মন্তব্যের জের। ২৪ ঘণ্টার জন্য নিষিদ্ধ করা হল দিলীপ ঘোষের নির্বাচনী প্রচার। ফলে ১৫ এপ্রিলের সন্ধে ৭টা থেকে ১৬ এপ্রিলের সন্ধে ৭টা পর্যন্ত প্রচার করতে পারবেন না তিনি। বস্তুত, বাংলায় পঞ্চম দফার নির্বাচন আগামী শনিবার। তার আগে কমিশনের নির্দেশে বুধবারই শেষ হয়ে গিয়েছে নির্বাচনী প্রচারের সময়সীমা। তার পর কেন দিলীপ ঘোষকে নিষিদ্ধ করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
একইসঙ্গে, বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুকে শোকজ নোটিস পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। শীতলকুচি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। সেই জবাবে কমিশন সন্তুষ্ট না হলে বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। উল্লেখ্য, শীতলকুচি কাণ্ডে আগেই বিজেপি নেতা রাহুল সিনহাকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য ব্যান করেছিল কমিশন। এবার দিলীপ ঘোষকেও নিষিদ্ধ করা হল প্রচারের কাজ থেকে।
গত, ১০ এপ্রিল বাংলায় চতুর্থ দফার ভোট ছিল। সেদিন কোচবিহারের শীতলকুচিতে সিআরপিএফ-এর গুলিতে নিহত হন চার ভোটার। কমিশন ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপর এই মৃত্যুর দায় চাপান তৃণমূল নেত্রী। এরপর দিনই গত ১১ এপ্রিল ‘বিদ্বেষমূলক’ মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ। রীতিমতো হুমকির সুরে তিনি বলেছিলেন, ‘জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে’। দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে কমিশনে নালিশ করে তৃণমূল। তার প্রেক্ষিতেই রাজ্য বিজেপি সভাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয় কমিশন। দিলীপের জবাবে সন্তুষ্ট নয় কমিশন। তাই ২৪ ঘণ্টার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল।
কী বলেছিলেন দিলীপ ঘোষ?
গত রবিবার বরানগরে বিজেপি প্রার্থী পার্নো মিত্রের হয়ে প্রচারে গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানেই তিনি বলেন, ‘অভিযোগ করলেই দিদি বলেন দুষ্টু ছেলে। আরে বাবা এত দুষ্টু ছেলে এল কোথা থেকে? ওই দুষ্টু ছেলেরাই গতকাল কোচবিহারের শীতলকুচিতে গুলি খেয়েছে। এই দুষ্টু ছেলেরা আর বাংলায় থাকবে না। সবে শুরু। যারা ভেবেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী বন্দুকটা দেখানার জন্য নিয়ে এসেছে, তারা বুঝে গিয়েছে ওই গুলির গরম কেমন। সারা বাংলায় এটা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভয় দেখিয়ে রাজনীতি করার দিন চলে গিয়েছে। ভয় উপেক্ষা করে মানুষ ভোট দিচ্ছেন। ১৭ তারিখ সকালেও লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিন। বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। কেউ লাল চোখ দেখাতে পারবে না। আমরা আছি। আর যদি বাড়াবাড়ি করে, শীতলকুচিতে দেখেছেন কী হয়েছে। জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে।’