তাদের দল "বাঙালি বিরোধী", এই অপবাদ কাটাতে উঠেপড়ে লেগেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। আগামীকাল শহরে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের জনসভার প্রেক্ষিতে দলের এই অবস্থান যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। শহরের বহু জায়গায় দেখা গেছে খোলাখুলি বার্তাবহ হোর্ডিং, যাতে লেখা আছে, "আমরা বাংলাদেশী মুসলমানদের বিতাড়িত করব, বাঙালিদের নয়।"
গত মাসের শেষে আসামের জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (NRC) চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশিত হওয়ার পরে পরেই তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপিকে "বাঙালি বিরোধী" পার্টি হিসেবে চিহ্নিত করে। অভিযোগের ভিত্তি ছিল চূড়ান্ত তালিকা থেকে ৪০ লক্ষ নাম বাদ পড়া।
"আমরা বাঙালিদের বিরুদ্ধে নই, আমরা অবৈধ অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে। আমরা আশেপাশের রাষ্ট্রে ধর্মীয় নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসা হিন্দু শরণার্থীদের অবশ্যই আশ্রয় দেব। কিন্তু যেসব মুসলমান অনুপ্রবেশকারী এখানে অবৈধভাবে রয়েছেন, তাঁদের আশ্রয় দিতে পারব না। NRC-র বাস্তবায়নের পর থেকেই আমাদের সম্বন্ধে একটা ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে বাংলার মানুষকে। আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই যে আমরা শুধুমাত্র বাংলাদেশী মুসলমানদের এখান থেকে উৎখাত করব," বলছেন রাজ্যের এক শীর্ষস্থানীয় বিজেপি নেতা।
আরও পড়ুন: NRC থেকে নামছুটদের পাহাড়ে বসানোর গোপন পরিকল্পনা চলছে: বিমল গুরুং
দলীয় সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে NRC বলবৎ করা নিয়েও বিজেপি তাদের অবস্থানের পুনর্মূল্যায়ন করতে বাধ্য হচ্ছে। "বাংলার মানুষ তাঁদের পরিচিতি সম্বন্ধে অত্যন্ত আবেগপ্রবণ। এরাজ্যে নিজেদের জমি শক্ত করতে গেলে খুব কট্টরপন্থী মনোভাব নিয়ে এগোনো যাবে না। মানুষের আবেগ বুঝে তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। কাজেই NRC নিয়ে সুর নরম করতে হবে," বলছেন আরেক বিজেপি নেতা।
অমিত শাহের জনসভায় যে কাল নাগরিক পঞ্জির প্রসঙ্গ উঠে আসবে, এমন আশা করাই যায়। ইতিমধ্যে বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা মঙ্গলবার এরাজ্যের মুসলমানদের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন, যে তাঁরা যেন এগিয়ে এসে নাগরিক পঞ্জিকে সমর্থন করেন।
তাঁর বক্তব্য, "আমি অনুরোধ জানাব সমস্ত মুসলমানকে, বিশেষ করে এরাজ্যে বসবাসকারী মুসলমানদের, যে তাঁরা যেন পশ্চিমবঙ্গে NRC-র রূপায়ণকে সমর্থন জানান। তৃণমূলের শাসনে রাজ্য বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের স্বর্গ হয়ে উঠেছে। তারা আমাদের চাকরি, খাদ্য, রোজগার কেড়ে নিচ্ছে।"