Advertisment

'অবসর নয়', দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে 'দলবদলের ভাবনা' রবীন্দ্রনাথের

বেচারাম মান্নাকে প্রার্থী করায় ক্ষোভে ফুঁসছেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। সহকর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। এক্সপ্রেস ফোটো- পার্থ পাল

রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন না সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। তবে ৮৯ বছরেও দলবদলের কথা ভাবছেন তিনি। প্রবীণ এই বিধায়ককে এবার টিকিট দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। হুগলির শিবরামবাটিতে বসে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, "আজ-কালের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলব। সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।"

Advertisment

এবারের বিধানসভা নির্বাচনে একাধিক মন্ত্রী ও বিধায়ককে টিকিট দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। তা নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। টিকিট না পেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘ দিনের ছায়াসঙ্গী সোনালি গুহ, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ভাঙড়ের আরাবুল ইসলাম চোখের জলে ভাসিয়েছেন। সিঙ্গুর বিধানসভায় এবার টিকিট পেয়েছেন জমি আন্দোলনের আর এক নেতা বেচারাম মান্না, তার পাশের কেন্দ্র হরিপালে দল প্রার্থী করেছে বেচারামপত্নী করবী মান্নাকে। করবীদেবী তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের হুগলি জেলার সভানেত্রী। এর আগে পঞ্চায়েত সদস্য ও দুবার জেলা পরিষদের প্রার্থী হিসাবেও জয়লাভ করেছেন।

এই প্রার্থী নিয়েই নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মাস্টারমশাই। রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য স্বামী-স্ত্রীর প্রার্থী হওয়াকে অপ্রত্যাশিত ও অবাঞ্ছিত ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন। এমন ঘোষণা কেন হল তার ব্যাখ্যা দিতে পারবেন য়াঁরা ঘটিয়েছেন তাঁরাই, বলেন তিনি। তবে তিনিও যে ছাড়ার পাত্র নন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথবাবুর কথায়, "সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করেছি। সিপিএম বা বিজেপি তোলাবাজি বা দুর্নীতি নিয়ে আমার বিরুদ্ধে একটা অভিযোগও করতে পারবে না। তবে দল কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে।"

আরও পড়ুন, Exclusive: নজরে নন্দীগ্রামে, ১০০ শতাংশ বুথে এজেন্ট দেওয়াই চ্যালেঞ্জ তৃণমূল-বিজেপি-র

তাহলে কেন বাদ দেওয়া হল আপনাকে? চারবারের এই প্রবীণ বিধায়ক বলেন, "আমাকে বলা হয়েছে আশি বছর পেরিয়ে গিয়েছে। ৮০ বছর পেরিয়েছে ৯ বছর আগে। তখন মনে পড়েনি। বড় বিলম্বে বোধোদয় হয়েছে। সুগার আছে এমন প্রার্থীও আছেন। আমার কিন্তু সুগার নেই।"

প্রার্থী না করা পাশাপাশি বেচারাম মান্নাকে প্রার্থী করায় ক্ষোভে ফুঁসছেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। সহকর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করছেন। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, "আমাকে অপ্রস্তুত শুধু নয়, অপমান করা হয়েছে। আমাকে একবার জানানোর প্রয়োজন হয়নি। আমাকে না করলেও আরও অনেকেই আছেন তাঁদের সিঙ্গুরে প্রার্থী করতে পারত। যাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে তাঁর সঙ্গে আমার বহু দিন ব্যক্তিগত সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন। একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রীকে দুটো পাশাপাশি কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে এমন নজির নেই। এই বিষয়ে অন্য খেলাও থাকতে পারে। তা জানি না।" যদিও মাস্টারমশাইয়ের ক্ষোভ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ বেচারাম মান্না। তিনি বলেন, "ওনার বিষয়ে আমি কিছু বলব না। যা বলার শীর্ষ নেতৃত্ব বলবে।"

রাজনৈতিক মহলের মতে, এবারের বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে যেভাবে দলবদল বা যোগদান পর্ব চলছে তা সর্বকালীন রেকর্ড। অশীতিপর এই বৃদ্ধ তৃণমূল নেতাও এখন দলবদল করতে চলেছেন। তৃণমূলে প্রথমে কেউ বেসুরো হন, তারপর বিজেপি যোগের অভিযোগ ওঠে, তারপর হঠাতই সে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন। এটাই এরাজ্যের সাম্প্রতিক ট্রেন্ড। রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য  বলেন, "এখনও আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। সিদ্ধান্ত নিইনি। আজ-কালের মধ্যে সিদ্ধান্তে পৌঁছাব। তবে রাজনীতি থেকে অবসর নেব না। দলত্যাগও একটা বিষয়। অন্য দলে যোগ দেওয়ায় চিন্তা-ভাবনাও আছে।"

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tmc Mamata Banerjee Rabindranath Bhattacharya West Bengal Assembly Election 2021
Advertisment